বিডি নীয়ালা নিউজ(১৭ই মে১৬) মারুফ সরকার (বিভাগীয় প্রতিনিধি, রাজশাহী): সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার অ্যানথ্রাক্স রোগীর সকল চিকিৎসার ভার বহন করবে সরকার একথা বলেছেন কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত ফারজানা। সেই সাথে উপজেলার সকল গবাদি পশুকে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য প্রায় এক লক্ষ টাকা বরাদ্ধ করা হবে।
অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোদের জন্য উপজেলা পর্যায়ে এই রোগ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপত্বিতে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন চৌধুরী, কামারখন্দ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সম্পা রহমান, ডাঃ নাজমুল হক, ভেটেনারী সার্জন উপজেলা প্রানিসম্পদ অফিস কামারখন্দ,ইমান আলী সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার, সিভিল সার্জন অফিস সিরাজগঞ্জ।
খোজ নিয়ে জানা যায়, এখন পর্যন্ত কামারখন্দে জামতৈল গ্রামের জবাই করা আ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর রক্ত মাংস নারাচাড়া করার কারণে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২৯ জনে দাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের রোগ তথ্য বিভাগের ৯ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল এ রোগে আক্রান্ত গ্রামটি পরিদর্শন করেন।
কামারখন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স এর আরএমও ডাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয় এরা হলেন, জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ইমান আলী, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাহজাহান আলী এবং জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই আক্রান্ত গ্রামটি পরিদর্শন করেন সেই সাথে ঐ গ্রামে আক্রান্তদের পর্যাপ্ত সেবা দেয়ারও তাগিদ দেন সংশিষ্টদের এবং সকল ইউনিয়ন পর্যায়ে গরু ছাগল মহিষসহ সকল গবাদী পশুকে অ্যানথ্রাক্সের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য প্রায় এক লক্ষ টাকা বরাদ্ধ করা হয় উপজেলা পশু সম্পদ অধিদপ্তর থেকে।
উপজেলা পশু সম্পদ অফিসার মোঃ আব্দুস সামাদ জানান, উক্ত গ্রামের আবুল কালামের ২টি, বুদ্দু সাহার ১টি এবং রশিদ সরকারের ১টি মোট ৪টি গরু ১৩এপ্রিল থেকে শুরু করে ২৯এপ্রিল পর্যন্ত পৃথক ভাবে জবাই করে ভাগবাটোয়ারা করে নেয় স্থানীয় লোকজন।
তিনি আরও জানান, আমরা এ পর্যন্ত ৫২০০গরুর মধ্যে ২২০০গরুকে ভ্যাকসিন দিয়েছি বাকিগুলোকে খুব তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন দেয়া হবে। কিন্তু স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, গবাদি পশুর বিভিন্ন ধরনের রোগ হলে আমরা গবাদি পশুর চিকিৎসার জন্য গেলে কর্তব্যরত পশু চিকিৎসকরা বিভিন্ন অজুহাত দেখান।
কামারখন্দ উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শরিফুল ইসলাম জানান, যারা মাংস কেটেছে এবং রক্ত মাংস নেড়েছেন তারাই এই রোগ আক্রান্ত হয়েছেন। আমরা সকল ঔষধ হাসপাতাল থেকে দিচ্ছি। এ রোগ সন্ধান পাওয়ার পর বিষয়টি ৩ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করলে আক্রান্ত গ্রামটি পরিদর্শন করেন। দলটি শিশুসহ ২৯জনের সন্ধান পান। সেইসাথে আক্রান্ত গরুর মাংস ও হাড় পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান।
আক্রান্তরা হলেন উক্ত গ্রামের আদেল(৪৫), জাকির হোসেন(৪০), সালাম শেখ(৪৫), শফিকুল(৪৫), হোসনেআরা(২৫), রুবেল(১৫), সালেকা(১৫), রাবেয়া(১৮), রফিক(৩৫), আলম আকন্দ(৩৫) সোনেকা(৩০), বানি খাতুন(২৮), শাহিদা(৩৮), সোহান(১২), কছির আলী(৬০), সাহেরা(৪৫), আসান(৪৫), লিলি(৬০), রুবেল হোসেন(২০), নূরবক্ত(৪৫), রমিচা খাতুন(৩৫) আরজিনা খাতুন(৩), মোছাঃ হাজেরা(৪০), আঃ রহিম(২১), নয়ন(৫), সুস্মিতা সাহা(৮), মোছাঃ ছাবিনা(২), আকাশ(৭), ও মোঃ খলিল(৬০)। আক্রান্তদের মধ্যে থেকে একজন জানান, আমি খাইনি কিন্তু নাড়াচাড়া করেছি তাই এ রোগ হয়েছে। এ রোগ ছরানোর কারনে এখনও এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।