মাফি মহিউদ্দিন,কিশোরগঞ্জ( নীলফামারী) প্রতিনিধি: ভিজিএফের চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক ছয়জন সাংবাদিক লাঞ্চিত হয়েছে এবং সাংবাদিকদের ইউনিয়ন পরিষদের একটি ঘরে তালা দিয়ে বন্দী করে রাখে। শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে এ ঘটনায় পুলিশ ও এলাকাবাসী গিয়ে ছয় সাংবাদিককে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জেলার সকল সাংবাদিকরা ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করেছে।
অভিযোগ মতে কোরবানীর ঈদ উপলক্ষ্যে পুটিমারী ইউনিয়নে দুস্থ অসহায় পরিবারের জন্য সরকার ৬ হাজার ১৩০ কার্ডের বিপরিতে ১১৬ দশমিক ৪ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়। উক্ত ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন কালোবাজারে ভিজিএফের চাল পাচার করেছে এলাকাবাসীর এই অভিযোগে দুপুর ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জ উপজেলার দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি শামিম হোসেন বাবু, দৈনিক আমাদের কন্ঠের শাকিল ইসলাম, নয়া দিগন্তের শাহজাহান সিরাজ, খোলা কাগজের ও বাংলাদেশ টু ডে মাফি মহিউদ্দিন, আমাদের অর্থনীতির ও মানব বার্তা মিজানুর রহমান, দৈনিক সংবাদের সিএস তপন ও যুগের আলোর প্রতিনিধি মিল্লাত হোসেন ওই ইউনিয়ন পরিষদে যায়।
দুপুর ১টার দিকে উক্ত চাল বিতরনের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ কর্মকর্তা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হান্নান সেখানে আসেন। সাংবাদিকরা এ সময় ট্যাগ কর্মকর্তাকে ভিজিএফের চাউলের মোট বরাদ্দের স্টক ঠিক রয়েছে কিনা তা গগনার জন্য বলেন ।
এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান তার স্টক ঠিক আছে দাবি করলেও খাদ্য গুদাম হতে মোট বরাদ্দের ১১৬ দশমিক ৪ মেট্রিকটন চাল উত্তোলনের কোন ডিও রশিদ দেখাতে ব্যর্থ হয়। এরপর চাউলের স্টক মেলাতে গিয়ে ধরা পড়ে আসল ঘটনা। সেখানে চাউল পাওয়া যায় ৭৩ দশমিক ৪ মেট্রিক টন। এতে চাউল কম পাওয়া যায় ৪৩ মেট্রিক টন। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহে দাবি করে তিনি ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার কার্ডের ৪৩ মেট্রিক মেট্রিকটন চাল বিতরন করেছে। সাংবাদিকরা ওই চাউল বিতরনের তালিকা দেখতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে উক্ত ৬ সাংবাদিককে একটি ঘরে আটকিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। আটকে থাকা ছয় সাংবাদিক মোবাইলে অন্যান্য সাংবাদিকদের অবগত করলে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। এ সময় সাংবাদিকদের বেআইনীভাবে ঘরে আটকিয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। কিশোরগঞ্জ থানা হতে ১০জন পুলিশ গিয়ে ওই ছয় সাংবাদিককে উদ্ধার করে।
পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান এ ঘটনার জন্য ওই ছয় সাংবাদিক সহ শতশত এলাকাবাসীর সামনে তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ইউপি চেয়ারমান এর আগেও বিভিন্ন সময় ব্যাপক অনিয়ম করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা কাজ না করে আতœসাত করে। এর সকল অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত হলে অনিয়ম দুর্নীতি প্রকাশ হয়ে পড়বে।
এঘটনায় ওই ছয় সাংবাদিক কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের কাছে বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে তিনি বলেন আপনারা আগামীকাল রবিবার অফিস চলাকালিন সময়ে অভিযোগ নিয়ে আসেন। । নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ ঘটনাটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন। এদিকে জেলার সকল সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের অনয়িমের বিচার দাবী করেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে