কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর আত্রাইয়ে মাচায় পটল চাষ করে সাফল্য পেতে শুরু করেছেন কৃষকেরা।পটল মাচায় চাষ করার পাশাপাশি তা পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন ধরনের ফাদ পেতে তাতেও সাফল্য মিলছে। কৃষকরা কৃষি কাজে নতুন নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করায় এই সাফল্য বলে মনে করছেন।উপজেলার বিসতৃণ মাঠে চলতি মৌসুমে চাষ করা হয়েছে পটল। অধিকাংশ পটলই মাচায় চাষ করা হয়েছে।বর্তমান বাজার দর ভাল থাকায় কৃষক বেশ লাভবান হবেন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। সূত্র জানায়,কৃষি প্রধান খাদ্যশষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁর আত্রাই। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষের বসবাস এ জনপদের শতকরা আশি শতাংশ মানুষই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। বছরের পুরো সময় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশ মাঠে নানা ধরনের সবজি চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চাষকৃত ফসল থেকে কৃষক বরাবরই লাভবান হন। চলতি মৌসুমে সব ধরনের সবজির পাশাপাশি ব্যাপক ভাবে পটল চাষ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এমন এক সময় ছিল এ জনপদের কৃষকদের মাটিতে পটল চাষ করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এমন এক সময় ছিল এ জনপদের কৃষক মাটিতে পটল চাষ করেছেন। আধুনিকতার ছোয়ায় তাদের সেই পুরানো দিনের চাষ পদ্ধতিও পাণ্টাতে শুরু করেছেন। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি গ্রামের কৃষক মাটির পরিবতে মাচায়(বানে) পটল চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। তাই দিন দিন এই চাষপদ্ধতি সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৭শ হেক্টর জমিতে পটল চাষ করা হয়েছে।আবহাওয়া এখনও কৃষকের অনুকুলে, তাই কৃষক এই ফসলে লাভবান হবেন বলে অনেকে মনে করছেন। এক সময় সমতল ভূমির মাটিতে পটল চাষ করা হলেও বর্তমান সময়ে তা নিচু জলাবদ্ধ জমিতেও ব্যাপক ভাবে চাষ করা হচ্ছেবলে সূত্র জানিয়েছেন। পটল চাষি উপজেলার আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের বাকি-উল-হামিম জনান,চলতি মৌসুমে তিনি ১০ কাঠা জমিতে পটল চাষ করেছেন। বাজার দর ভাল থাকায় তিনি লাভের আশা করছেন। মাচায় চাষ পদ্ধতি অনেক ব্যয় বহূল বলে তিনি জানান। কারণ মাচায় চাষ করতে হলে অতিরিক্ত খরচ হয় বাঁশ,তার,সূতা,পাটখড়ি ইত্যাদি। কিন্তু মাটিতে চাষ করলে এসব কিছুই লাগে না। তবে মাটির চাষ থেকে মাচায় চাষ করলে ফলন বেশি হয় বলে তিনি জানান। প্রতি বাংলা সনের আষাঢ,শ্রাবণ ও ভাদ্র মাস এই তিন মাসের মধ্যে পটলের লতি মাটিতে রোপন করতে হয়। চারা বের হওয়ার পর পরই পরিচযা শুরু, এরপর মাচা তৈরি করে প্রতিটি চারা ওই মাচায় তোলার ব্যবস্থা করা হয়। চারা বের হওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসা শুরু করে।কৃষক বাকি-উল-হামিম জানান,গত ২/৩ বছর ধরে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মাচার ফাঁদ বিতরণ করা হচ্ছে। এই ফাঁদ ফসলকে পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা করে। এই ফাদের কারনে ফসলের উৎপাদনও বেড়ে যায় বলে তিনি জানান। কৃষক বাকি-উল-হামিম এর মতো ওই মাঠে আরিফুল ১০ কাঠা, সুদেবচন্দ্র ১৫ কাঠা, জালাল উদ্দিন ১৩ কাঠাসহ প্রায় শতাধিক কৃষকরা পটল চাষ করছেন। সমতল ভূমির পাশাপাশি নিচু জলাবদ্ধ জমিতেও মাচায় হচ্ছে পটল চাষ।ব্যতিক্রমধর্মী এই চাষ পদ্ধতিতে উপজেলার ,সিংসাড়া,দিঘা, ব্রজপুর, আহসাগঞ্জ, মডনডাঙ্গা, অধিকাংশ গ্রামের কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য পেতে শুরু করেছেন। নতুন নতুন উদ্ভাবনা কৃষককে বেশি বেশি সহযোগিতা প্রদান করা জরুরী বলে মনে করছেন সচেতনমহল। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন,কৃষকদের সব ধরনের ফসল ফলাতে কৃষি অফিস যথাযথ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।ক্ষেতের ফসলের যাতে কোন ক্ষতি না হয় তার জন্য প্রতিটি এলাকায় সুপারভাইজার নিয়োমিত কৃষকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে