ডেস্ক রিপোর্টঃ জেলায় গত ৫ বছরে (২০১১-১২ অর্থবছর হতে ২০১৫-১৬ অর্থবছর) প্রায় ৮৬ কোটি টাকার বয়স্ক ভাতা বিতরণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন প্রায় ২ লাখ অসহায় বয়স্ক মানুষ। সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের অধীনে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে সমাজের দুস্থ, দরিদ্র, অবহেলিত ও অক্ষম বৃদ্ধরাই সরকারের এ সাহায়তা পাচ্ছেন।
ভোলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩৬ হাজার ৩৯৪ জন বয়স্কের মাঝে বিতরণ করা হয় ১৩ কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার ৪শ’ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৩ কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার ৪শ’ টাকার ভাতা বিতরণ হয়েছে ৩৬ হাজার ৩৯৪ জনের মধ্যে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বয়স্ক’র সংখ্যা ৩ হাজার ৬৩৯ জন বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৪০ হাজার ৩৩ জনের মাঝে বিতরণ হয়েছে ১৯ কোটি ২১ লাখ ৫৮ হাজার ৪শ’ টাকা। এবছর ভাতার টাকাও বৃদ্ধি পেয়েছে ১শ’ টাকা। পরবর্তি অর্থবছরে একই সংখ্যার ব্যক্তিকে সমপরিমাণ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
একইভাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২১ কোটি ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৮০০ টাকা বিতরণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৬ জনের মাঝে। এখানে উপকারভোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩ জন ও অর্থ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ১৪ হাজার ৪শ’ টাকা। এই ৫ বছরে মোট বিতরণ হয়েছে ৮৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৬ হাজার ৪শ’ টাকা। উপকৃত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯০ জন বয়স্ক মানুষ। এছাড়া চলতি অর্থবছরে জনপ্রতি মাসিকহারে ৫শ’ টাকা করে বয়স্কভাতা বিতরণ করা হচ্ছে।
সমাজসেবা কর্মকর্তারা জানান, সমাজের দরিদ্র ও অসহায় বয়স্ক মানুষের জন্য সরকারের এ কার্যক্রমের পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবছরই ভাতার বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক এ ভাতার পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। আর সবচে সুবিধা হচ্ছে এখন আর ভাতার জন্য কষ্ট করে সমাজসেবা কার্যালয়ে আসতে হয় না। যথাসময়ে নির্ধারিত ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টে গিয়ে ভাতার টাকা জমা হয়। তাই ভাতার টাকা তুলতে তাদের আর কোন ভোগান্তি পোহাতে হয় না।
পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের আলগী এলাকার বয়স্ক ব্যক্তি আজাহার আলী (৬৭) বাসস’কে বলেন, তিনি দরিদ্র ও বৃদ্ধ মানুষ। ছেলের সংসারে থাকেন। এক সময়ে রিকসা চালাতেন। এখন ছেলেও রিকসা চালায়। টানাটানির সংসার। তাই ভাতার টাকায় তার ওষুধ কিনে খেতে হয়। এতে তার মস্ত উপকার হয় বলে জানালেন তিনি। একই কথা জানালেন আওলাদ হোসেন ও সুলতান শরিফ নামের ২ অসহায় বৃদ্ধ। তারা সরকারের এ কর্মকান্ডের জন্য ধন্যবাদ জানান।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. ইকবাল কবির বাসস’কে জানান, বয়স্ক ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে পুরুষদের ৬৫ বছরের বেশি ও নারীদের ৬২ বছরের অধিক বয়সকে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেককে মাসে ৪শ’ টাকা করে ৩মাস অন্তর অন্তর ১২শ’ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দিন দিন সমাজের দুস্থ ও অবহেলিত বয়স্ক মানুষের জীবন মানের উন্নতি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বয়স্কদের তালিকা তৈরি করা হয়। উপজেলা চেয়ার‌্যানের সভাপতিত্বে তালিকায় নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রত্যেককে ১০ টাকার একাউন্ট খুলতে হয়। এরপর প্রতি ৩মাস পর পর নির্ধারিত ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব নম্বরে ১২শ’ টাকা জমা হয়ে যায়। এটি মূলত সামাজিক সুরক্ষামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসাবে সমাজের অসহায় বৃদ্ধদের কল্যাণে কাজ করছে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে