করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
পাকিস্তানের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেওয়ার ৪৯তম বার্ষিকীতে স্বাধীনতা দিবস ভিন্ন আঙ্গিকে পালোনের কথা থাকলেও করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারনে সকল কর্মসুচি বাতিল করা হয়। যদিও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী তথা মুজিববর্ষে এবার স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন আরো আড়ম্বরভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের পর দ্রুত পালটায় পরিস্থিতি, বদলাতে হয় পরিকল্পনা। উৎসব আয়োজনের পরিবর্তে শুরু হয় অন্যরকম যুদ্ধ প্রস্তুতি।
ভয়াবহ সংক্রামক ব্যাধি কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে একে একে আসা নানা ঘোষণার মধ্যে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের আকার সীমিত করার ঘোষণাও আসে৷এর আগে গত
১৭ মার্চ মুজিব বর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও সীমিত আকারে পালন করা হয়।
গত ২১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠক করে জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তায় স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বঙ্গভবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করেন। স্বাধীনতা পদক বিতরণ অনুষ্ঠানও বাতিল করা হয়৷
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের এই শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময়ে তারা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে সামনে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান। এর আগে ভোরে ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এছাড়া মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গতকাল বাদ জোহর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে দোয়া ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতী মাওলানা মিজানুর রহমান দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন।
মুনাজাতে ২৬ মার্চ ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাতবরণকারি সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।
এছাড়া বর্তমানে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস যেভাবে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে তা থেকে যেন বাংলাদেশের মানুষসহ বিশ্বের মানুষ পরিত্রাণ পায় সেজন্য বিশেষভাবে দোয়া করা হয়।
মুনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট শাহাদাতবরণকারী তাঁর পরিবারের সকল সদস্যের আতœার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এ সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার, মো. আনিছুর রহমান সরকার, উপ-পরিচালক মোঃ আলমগীর হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গতকাল সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে বিজিবি’র সকল ইউনিটসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার শান্তি এবং বিজিবি’র উত্তরোত্তর অগ্রগতি ও একাত্মতা কামনা করে বিজিবি’র সকল সদস্য নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দুপুরে বিজিবি সদস্যদের মাঝে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। বিজিবি’র সকল ইউনিটে ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং সন্ধ্যার পর পিলখানাস্থ গুরুত্বপূর্ণ অফিস ভবন ও গেইটসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়।
এছাড়ও দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে