করোনা ভাইরাসের কারণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর এ কারণেই রাজধানী জুড়ে নেমে এসেছে নীরবতা।
রাজধানী জুড়ে ছোট বড় সব সড়কই এখন যানবাহন শূন্য। এমনকি পাড়া, মহল্লার রাস্তা, গলি পথেও নেই কোনো রিক্সা বা ছোট যানবাহন। শুধু যানবাহন নয়, সড়কগুলো হয়ে পড়েছে জনশূন্য। বন্ধ রয়েছে দোকান পাটসহ সব ধরণের প্রতিষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর পুরানা পল্টন, জিরো পয়েন্ট, কাকরাইল, মতিঝিল, টিকাটুলি, খিলগাঁও, মালিবাগ, টিটিপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় কোনো যানবাহন নেই। প্রতিটি সড়কই যানবাহন ও জনশূন্য।
বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসের যে দাপট চলছে, বাংলাদেশেও তার আঘাত লেগেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।
এই সাধারণ ছুটি চলাকালে জনসাধারণকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের নির্দেশনা মেনে সর্ব স্তরের মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। জন সাধারণের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরা।
আজ থেকে সারাদেশে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। লঞ্চ, রেল ও বিমান চালচল আগে থেকেই বন্ধ। সীমিত আকারে ফেরি চলাচল করছে। রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব জেলায় রাস্তায় লোক চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে, রাজপথ যেন পরিণত হয়েছে বিরানভূমিতে।
সকালে সায়েদাদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মহাখালি, ফুলবাড়িয়া, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে কোনও বাস ছেড়ে যায়নি। এসব টার্মিনালের শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ এরই মধ্যে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। যারা ঢাকায় রয়েছেন তারা টার্মিনালগুলোতে রান্না করে খাচ্ছেন।
সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস-মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জানান, বৃহস্পতিবার একটি বাসও ছাড়া হয়নি। রাস্তাঘাতে কোনও লোকজন নেই। এমন পরিবেশ আর কখনও হয়নি। ‘আমাদের টার্মিনালের শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। এখন আমি তাদের রান্না করার ব্যবস্থা করছি।’
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ২৪ মার্চ সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় আজ বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে সবধরণের গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেন। সরকারের এমন ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোনও ধরণের পরিবহন চালাচল করছে না। নগরীর সড়কগুলোও জনমানবশূন্য অবস্থায় রয়েছে।
গত ২৪ মার্চ থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রীবাহী রেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে সকাল থেকে কমলাপুর স্টেশন থেকে কোনও ট্রেন ছাড়া হয়নি।
সরকারের এই ঘোষণা মেনে সব ধরণের যানবাহন বন্ধ রয়েছে। রাজধানীর সড়কগুলোর পাশাপাশি মার্কেট, শপিং মল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরণের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। রাজধানী শহরের পাড়া, মহল্লার দোকান, পাট বন্ধ এবং মহল্লার রাস্তায় কোনো যানবাহন চলছে না। কোনো কোনো এলাকায় দুই একটি মুদির দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। দুই একটি রিক্সা দেখা গেলেও যাত্রী নেই।

B/S/S/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে