জি,এম স্বপ্না,সিরাজগঞ্জ : রশিদপুর নয়াপাড়া। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটি অবহেলিত গ্রাম। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হাটিকুমরুল ইউনিয়নে এই গ্রামের অবস্থান। গ্রাম থেকে বের হবার কোন রাস্তা নেই।সভ্য যুগেও ধান ক্ষেতের আইল তাদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা। স্থানীয় স্বহৃদয়বান জমির মালিকরা যাতায়াতের জন্য জমির আইল কোন রকম প্রশস্ত করে দিয়েছেন।অপর দিকে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে স্বরস্বতী নদী। নদীর উপর নেই কোন ব্রীজ বা সেতু। গ্রামের ভিতরের একমাত্র রাস্তাটি নেমেছে স্বরস্বতী নদীতে।বর্ষা মৌসুমে সেই নদীর ঘাটে রশিটানা ডিঙ্গি নৌকাই পারাপারের একমাত্র ভরসা।খরা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো। গ্রামবাসীর উদ্যোগে নৌকা আর সাকোঁর ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।শিশুদের পড়া লেখার জন্য গ্রামে নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। দু’হাজারেরও বেশি মানুষের বসবাস এই গ্রামে। পাশ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব আড়াই কিলোমিটার। গ্রামে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পড়ুয়াদের সংখ্যাও কম নয়। এসব শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ধান ক্ষেকের আইল ও নদীপার হয়েই দূরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া করতে যেতে হয়।তাই শিক্ষার্থীসহ সবাইকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।যাতায়াতের নিদারুন কষ্ট নিয়ে বসবাস করছেন এ গ্রামের মানুষ।

রশিদপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আশরাফ আলী, বেল্লাল ভুইয়া, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল হাই জানান, উপজেলার মধ্যে খুবই অবহেলিত গ্রাম রশিদপুর নয়াপাড়া। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই গ্রামে প্রবেশের একটি রাস্তার জন্য তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে অনেকবার আবেদন করেছেন। আবেদন করেছেন পাশের অপ্রশস্ত সরস্বতী নদীর উপর একটি পাকা সেতুর। কিন্তু তাদের এই আবেদন কখনই আমলে নেয়নি কেউ। গ্রামবাসীর উদ্যোগে ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় পাটধারী পুর্বপাড়া থেকে নয়াপাড়া ময়নাল খন্দকারের বাড়ির পূর্বপাশ পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা সহ গ্রামের লোকজন নয়াপাড়ার ওয়াজেদ আলীর বাড়ি সংলগ্ন নদীর ঘাটে রশি টেনে নৌকায় পারাপার হতে হয়। যাতায়াতের ভোগান্তি মাথায় নিয়েই গ্রামবাসীকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে তাদের গ্রাম থেকে বের হওয়ার রাস্তাটি পাঁকাকরণ এবং স্বরস্বতী নদীর ওয়াজেদ আলীর বাড়ি সংলগ্ন নদীর ঘাটে একটি ব্রিজ/সেতু নির্মাণসহ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ ের সাথে কথা হলে তিনি উক্ত গ্রামের লোকজন চলাচলের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান,পাটধারী থেকে রশিদপুর পর্যন্ত রাস্তা নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং নদীতে একটি ব্রীজ নির্মাণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ করা হবে। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, নতুন প্রকল্পের নির্দেশনা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে