ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশে ঢাকার কাছে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় প্রায় অর্ধশত তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার পর সে এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

পুলিশ বলছে কারখানাগুলো গতরাতে বন্ধ ঘোষণার পর সহিংসতার আশংকায় আশুলিয়ায় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

আশুলিয়া থেকে বিবিসি’র সংবাদদাতা কাদির কল্লোল জানিয়েছেন যেসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলোর মূল ফটকের সামনে কারখানা বন্ধের নোটিস লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।বন্ধ হওয়া প্রতিটি গেটের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আশুলিয়ায় বেতন ভাতা বাড়ানোর দাবিতে অব্যাহত শ্রমিক আন্দোলনের মুখে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৫৯টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।

আশুলিয়া থেকে বিবিসি’র সংবাদদাতা কাদির কল্লোল জানান, ” সকাল থেকে পুলিশ মাইকিং করছে যাতে বন্ধ কারখানার সামনে বা অন্য কোথাও শ্রমিকরা জড়ো না হয়।” পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে শ্রমিকদের বাসায় অবস্থান করার জন্য নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

সকালের দিকে কোন কোন কার‍খানার সামনে কিছু শ্রমিক জড়ো হয়েছিল। কিন্তু কারখানা বন্ধের নোটিস দেখে এবং পুলিশের মাইকিং শুনে তারা চলে যায়।

সংবাদদাতা কাদির কল্লোল জানাচ্ছেন, আশুলিয়া এলাকায় এক হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিল্প পুলিশের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, বন্ধ করে দেয়া ৫৯টি কারখানায় দেড় লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করে। আশুলিয়া শিল্প এলাকায় সাড়ে সাতশ’র বেশি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। যে ৫৯টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো ছাড়া বাকি প্রায় ৭০০ কারখানায় উৎপাদন চলছে।

আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দাবী করছেন, বর্তমানে ন্যুনতম মজুরী ৫৩০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। তাদের যুক্তি হচ্ছে জীবন-যাত্রার ব্যয় বেড়েছে।

তবে যেসব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সেসব কারখানার শ্রমিকদের তেমন একটা উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছেনা ।

সংবাদদাতা কাদির কল্লোল বলেন, ” তারা (শ্রমিকরা) মনে করে যে মালিকরা তো কোটি-কোটি টাকা খরচ করে কারখানা স্থাপন করেছে। সুতরাং এটা চালু হবেই। ”

শ্রমিকরা বলছেন, বেতন বৃদ্ধির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত কারখানা খুললেও তারা কাজে যোগ দেবেন না।

সোমবার এই বিষয়ে ত্রি-পক্ষীয় একটি বৈঠকে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত হলেও, মঙ্গলবারও অর্ধশত কারখানার শ্রমিকরা কাজ থেকে বেরিয়ে যান, এরপরই বিজিএমইএ এই সিদ্ধান্ত নেয়।

বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এরই মধ্যে বলছেন, নতুন কোন কারখানায় বিক্ষোভ হলে, সেগুলোও বন্ধ করে দেয়া হবে।

তৈরি পোশাক খাতের সব পক্ষের সম্মতিতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ নিম্নতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল। মালিকরা বলছেন, পাঁচবছরের আগে এ নিয়ে আলোচনার সুযোগ নেই।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে