ডেস্ক রিপোর্টঃ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগণের ওপর পরিচালিত গণহত্যা-বর্বরতা বন্ধের দাবিতে লক্ষাধিক গণস্বাক্ষরসহ আগামি ২২ অক্টোবর রোববার জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি পেশ করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এবং গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের সম্মান ও নাগরিক অধিকারসহ তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনই এ সংকটের একমাত্র সমাধান বলে উল্লেখ করেন সিপিবি-বাসদ-বাম মোর্চার নেতৃবৃন্দ।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম। আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক সাইফুল হক। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদ-এর বজলুর রশিদ, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, লুনা নূর প্রমুখ।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আক্রমণকে ও বর্বরতাকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসাবে অভিহিত করে সিপিবি’র সাধারন সম্পাদক শাহ আলম বলেন, ‘সহিংসতা, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া, হত্যা, ধর্ষনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের এমন কোন কর্ম নেই যা রোহিঙ্গাদের উপর চালানো হয়নি’।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া- চীনের ভেটো ক্ষমতার কারণে রোহিঙ্গা জনগণের উপর গণহত্যা ও বর্বরতা বন্ধে মিয়ানমারকে বাধ্য করা সম্ভব নাও হতে পারে- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেকারণে বিষয়টিকে সাধারণ পরিষদে উত্থাপন করে আলোচনার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের সমর্থন অর্জনের জন্য সরকারকে (বাংলাদেশ) উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে’।
তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরতা-গণহত্যা বন্ধ করতে মিয়ানমারকে বাধ্যকরা, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে কফি আনান রিপোর্ট বাস্তবায়ন এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকারের স্বীকৃতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে লক্ষাধিক গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব দাবিতে গণস্বাক্ষরসহ আগামি ২২ অক্টোবর রোববার সকাল ১১টায় বাংলাদেশে জাতিসংঘ কার্যালয়ে সংস্থার মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, রোহিঙ্গা বিষয়টি এখন আর বাংলাদেশ- মিয়ানমারের দ্বিপাক্ষিক বিষয় নয়। এটি একটি বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সেকারনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মিশন পাঠিয়ে ওইসব দেশের সরকারসমূহকে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা ও বর্বরতা বন্ধে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে উদ্যোগ নিতে হবে।
তারা নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক উন্মাদনাকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে দলীয় কাদা ছোড়াছুড়ি না করা বা এটিকে সুবিধা গ্রহণের বিষয় হিসাবে না নেয়ার আহবান জানিয়ে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘এটা মিয়ানমারের সমস্যা এবং তাদেরকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।