আ,ফ,ম মহিউদ্দিন শেখ কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকেঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় পুলিশ কনষ্টেবল, স্বাস্থ্য সহকারীসহ বিভিন্ন সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রতারকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের শ্রী বিনয় চন্দ্রসহ দুই জনের নামে নীলফামারী জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পুটিমারী ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের শ্রী হরি শংকর রায়ের ছেলে শ্রী বিনয় চন্দ্র রায় (৪৫) নিজেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুলিশের কনষ্টেবল ও স্বাস্থ্য সহকারীসহ বিভিন্ন সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ দেওয়ার নাম করে বিভিন্নজনের কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। চাকুরী না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা জমিজায়গা বিক্রি করে দেয়া টাকা ফেরৎ চাইলে ওই প্রতারক দীর্ঘদিন থেকে তাদের সাথে টালবাহনা করছেন। এমনকি পাওনা টাকা ফেরৎ চাইলে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন।

জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের লক্ষী মারাই গ্রামের কার্তিক চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, গত ২০১৭ সালের মার্চ মাসে দৈনিক জাতীয় পত্রিকায় পুলিশের কনষ্টেবল পদে চাকরীর জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। আমার প্রতিবেশি শ্রী পরিতোষ চন্দ্র রায় আমাকে জানায় যে, তার হাতে পুলিশের বড় কর্মকর্তা আছে। পরে পরিতোষ আমার ছোট ভাই মুকুল চন্দ্রকে পুলিশ কনষ্ঠেবল পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে কথিত পুলিশের বড় কর্মকর্তা নামধারী শ্রী বিনয় চন্দ্রকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। আমি বিনয়ের কথা অনুযায়ী আমার ভাইকে পুলিশে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তিন দফায় মোট ৬ লাখ টাকা প্রদান করি। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরেও আমার ভাই পুলিশে নিয়োগ না পাওয়ায় আমরা পাওনা টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে সে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়।

ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের শেওটগাড়া গ্রামের ধরনীকান্ত রায়ের ছেলে শ্রী হরেশ চন্দ্র রায় বলেন, শ্রী বিনয় চন্দ্র রায় আমার ছেলে রিপন চন্দ্র রায়কে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকুরী দেওয়ার নাম করে আমার কাছে এক লাখ দশ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার একটি গাভী ছিল। যার দুধ বিক্রি করে আমি সংসার চালাতাম। সেই গাভীটি ও তার বাছুরটি বিক্রি করে আমি তাঁকে টাকা দিয়েছি। কিন্তু আমার ছেলের চাকুরী না হওয়ায় আমি সেই টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে সে আমাকে মারপিট করে। আমি নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে তিনদিন ভর্তি ছিলাম। তারপরও সে আমার পাওনা টাকা ফেরৎ দিচ্ছেনা। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কেশবা গ্রামের শিক্ষক শংকর কুমার রায় বলেন, বিনয় পুলিশে চাকরী দেওয়ার নাম করে চাঁদখানা ইউনিয়নের বিনয় চন্দ্রের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ও রণচন্ডি ইউনিয়নের একজনের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছে। তারা সকলেই বিনয়ের বাড়িতে দিনরাত ধরনা দিয়েও টাকা উদ্ধার করতে পারছেনা।
শ্রী বিনয় চন্দ্রের সাথে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে একাধিবার ফোন দিলে সে ফোন রিসিভ করেননি।

কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বজলুর রশিদ বলেন, পুলিশে চাকরী দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ায় শ্রী বিনয় চন্দ্র সহ দুই জনের নামে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে