বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন, সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে আমরাদের যে লক্ষ্য- গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তা ফিরিয়ে আনতে পারব। অবশ্যই আমরা জয়ী হব।
রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ: আজকের প্রেক্ষাপট ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত আশাবাদী। কারণ এই দেশের মানুষ কখনও ব্যর্থ হয়নি। তারা বার বার সংগ্রাম লড়াই করেছে। বার বার জয়ী হয়েছে। হয়তো কিছুদিনের জন্য আমরা পেছনে থাকতে পারি, কিন্তু কখনও আমরা পরাজিত হইনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটানো হয়েছে তার উদ্দেশ্য হলো সরকারের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করা। সামনে যে নির্বাচন নির্বাচন খেলা আসছে তাতে আবার জয়ী হওয়া। আমি আগেও অনেকবার বলেছি এই ঘটনার মূল উদ্দেশ্য হলো এখানে বিএনপিকে আবার জড়িয়ে দিয়ে জনগণের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে অধিকার আদায়ের জন্য, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে নিরাপত্তার জন্য- সেই আন্দোলন থেকে দৃষ্টি ভিন্নদিকে ফেরানো।
তিনি বলেন, এই সরকার ২০১২ সালে অত্যন্ত সুকৌশলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে সেদিন থেকে দেশে সহিংসতা-অস্থিরতা পাকাপোক্তভাবে গেড়ে বসেছে। সেদিন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন ‘এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা স্থায়ীকরণ করা হলো’। যা এখনও চলছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে তখনও বলেছি, এখনও বলছি, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কখনও কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হতে পারে না। বর্তমানে দেশে যতগুলো সঙ্কট তৈরি হচ্ছে, সবকিছুর মূলে গণতন্ত্রহীনতা। তাই আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যতায় এসব সঙ্কট থেকেই যাবে। আজ আমরা সবাই পরিবর্তন চাই। এই মুহূর্তে পরিবর্তন চাই, কিন্তু সেই পরিবর্তন ঘটাতে হলে সবার আগে তরুণ ও যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংস করছে, তারা অত্যন্ত সুচতুরভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একটি দলকে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য কাজ করছে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে এখানে যেন একদলীয় শাসন, একজন নেতা প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ীরা যেন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য হতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গৌতম চক্রবর্তী, জহির উদ্দিন স্বপন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলালসহ আরও অনেকে।
ban/N