দেশের অর্থনীতি আবারও গর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে বেশি সময় লাগবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, অর্থনীতিকে আমরা মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে পারবো। তাতে বেশি সময় লাগবে না। সব জিনিসেই দেখতে পাবেন আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে। আগে যেমন আমাদের অর্থনীতিকে নিয়ে গর্ব করতাম, সারা পৃথিবীর মানুষ যেভাবে গর্ব করতো, সেই গর্বের জায়গায় যাবো। এটা করতে বেশি সময় লাগবে না।’

বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে ভার্চুয়ালি অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই যে ওঠা-নামা বেশি হচ্ছে, সেটি কমিয়ে আনতে হবে। সেটা করতে পারলে একই প্ল্যাটফর্ম থেকে সবাই এগোতে পারবে। সেই প্ল্যাটফর্মই হবে ন্যায়-নীতির ভিত্তি।’

মূল্যস্ফীতি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, সেসময় মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। সেই কত বছর আগে এটি ছিল। এরমধ্যে অনেক চড়াই-উৎরাই পাড়ি দিয়েছি। মহামারি মোকাবিলা করেছি, সুন্দরভাবেই মোকাবিলা করেছি। সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছি, এটি সুন্দরভাবে করার জন্য। এখন আমরা ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। এটিও সুন্দরভাবে মোকাবিলা করবো। আরও মাসখানেক পর এর প্রতিফলন দেখতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘আমদানি করে এখন যা নিয়ে আসছি, সেগুলো দেশে পৌঁছালে সঙ্গত কারণে অন্যান্য জিনিসের দামও কমবে। খাদ্যদ্রব্যের বাইরেও বিভিন্ন জিনিসের দাম কমে আসবে। ডলারের দামও কমে আসবে। মূল্যস্ফীতি এখন মাত্র ৭ শতাংশ। ভোজ্যতেল বা অন্যান্য যেসব জিনিস তাদের থেকে কিনতে হয়, তাদের যদি দাম বাড়ে সেই প্রভাব এখানেও পড়ে। আমাদের বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে বলে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।’

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এ উদ্যোগটি দেশের মানুষ গ্রহণ করবে। অনুরোধ থাকবে দেশের প্রতি মমত্ববোধ, আগামী প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সবাই যেন আরও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করেন। যাদের কাছে অপ্রদর্শিত টাকা আছে, সেটি এই স্কিমের আওতায় এনে স্থায়ীভাবে আগামী প্রজন্মের জন্যই এটি করা উচিত।’

দুর্নীতি নিয়ে করা অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের দুর্নীতি কতটা হয়, সেই তথ্য আমার কাছে নেই। আপনাদের কারও কাছেও হয়তো নেই। কিন্তু অনুমান করে বলতে পারেন যে, দুর্নীতি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এক্সপোর্ট যদি ইমপোর্টের চেয়ে বেশি না হয়, তাহলে আমরা এক্সপোর্ট করবো কেন- এ প্রশ্নটা এসে যায়। সবসময় আশা করি, রপ্তানি বাণিজ্য আমদানির চেয়ে বেশি হবে। কিন্তু দেখলাম কিছুদিন ধরে এ কাজটি (রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেশি) হচ্ছে। এখানে একটি আরেকটিকে ব্যালান্স করে। সঠিকভাবে এগুলো মূল্যায়িত হচ্ছে না। যে মানুষগুলো শ্রম দিয়ে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, তাদের স্বপ্ন একটাই আগামী প্রজন্ম লাভবান হবে। তারা একটি বিশুদ্ধ স্বপ্ন দেখবে। সেজন্য তারা যা পাচ্ছেন, দেশে পাঠাচ্ছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ সালে ভীষণ ক্রাইসিস হয়েছিল, সেসময় মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল। এখন আমাদের সবসময় রিজার্ভ মেইনটেইন করতে হয়। যদি একটু বাড়ে-কমে, তাহলে সমস্যা নেই। তিনমাসের থাকা উচিত, এটি আইএমএফের চাহিদা। সেসময় আমাদের ছিল মাসে গড়ে ৭৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার। তিনমাসে দরকার ছিল ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। সেসময় সেটি কিন্তু ছিল। সেসময় এটি কমার কারণে সরকারকে ৫৬ আইটেমের এলসি মার্জিন বাড়ানো হয়েছিল, সেটা সব দেশই করে।’

JAg/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে