ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একদিন আগেই কলেজের ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে চাঁদপুর সার্কিট হাউজে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা প্রায়ই দেখি ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও আশপাশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে নানান বিষয়ে নানান রকম বাগবিতণ্ডা হয়। সেই বাগবিতণ্ডা অনেক সময় সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের ঘটনায় আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষে যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার বিষয়গুলো আমরা দেখছি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ তারিখ (২০ এপ্রিল) ক্লাস শেষে বন্ধ হওয়ার কথা রয়েছে, ঢাকা কলেজে আজও যেহেতু ক্লাসের কোনো পরিবেশ নেই; কাজেই আজ থেকেই সেখানে ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। ঈদের ছুটিতে সবাই বাড়ি চলে যাবে। আশা করছি হলগুলো সব বন্ধ থাকবে।’

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আজ সকাল থেকে যদি ((ঘটনাস্থলে) থাকতো তাহলে হয়তো (পরিস্থিতি) আরেকটু ভালো হতে পারতো। তবে তারাও চেষ্টা করেছে এবং এখন পর্যন্ত করে যাচ্ছে। আমি বলবো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব পক্ষকে একটু শান্ত হতে হবে’, যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সংঘর্ষের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানানভাবে উসকানি দিয়ে, বিভিন্ন রকম গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতিকে খারাপ করার একটা অপচেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক ভাইদের অনুরোধ করবো কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য। যেহেতু রোজার দিন তাই সবাই শান্ত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘পুরো বিষয়টি দেখার জন্য গতকাল রাত থেকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক যুক্ত রয়েছেন। আমরাও বিষয়গুলো দেখছি। আমি সকাল থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও কমিশনার মহোদয়ের সঙ্গে বারবার কথা বলছি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে বারবার কথা বলেছি। পাশাপাশি আমাদের ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আশা করছি পরিস্থিতি দ্রুতই শান্ত হয়ে আসবে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সবাইকেই ধৈর্য ধরতে হবে।’

এসময় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, নৌ পুলিশের এসপি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, হাইমচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার (১৮ এপ্রিল) দিনগত মধ্যরাত থেকে নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পরে রাতে পরিস্থিতি শান্ত হলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে ফের সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষের ঘটনায় ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত অবস্থায় ২২ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের কারণে আজিমপুর থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পর্যন্ত যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ আছে নিউমার্কেট এলাকার অন্তত ২০টি মার্কেটের দোকানপাট।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ কেনাকাটার ভর মৌসুমে এমন ঘটনা দুঃখজনক। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে তাদের ক্ষতি শত কোটি টাকা ছাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন।

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে