লেবাননে চলমান যুদ্ধপরিস্থিতির কারণে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসে আবেদনকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের ৫২ জনের ষষ্ঠ গ্রুপটি আজ ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বৈরুত রফিক হারিরি অন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাই হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বিমানযোগে রওয়ানা করেছে।
বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাদের বহনকারী বিমানটি ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে বৈরুত রফিক হারিরি অন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওয়ানা হয়ে রাত ১১টায় ঢাকা হযরত শাহাজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বিমানটি মাঝপথে দুবাইতে যাত্রাবিরতি করবে।
এতে বলা হয়, আবেদনকারীদের মধ্যে যাদের পাসপোর্ট, আকামাসহ আবশ্যক ট্রাভেল ডকুমেন্টস প্রস্তুত রয়েছে, তাদের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় দেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাস আগ্রহী নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
লেবানন থেকে দেশে ফিরতে ইচ্ছুক ৫৪ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রথম দলটি ২১ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরে আসেন।
দ্বিতীয় দফায় দুই নবজাতকসহ মোট ৬৫ লেবানন প্রবাসী সৌদি আরবের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে (এসভি ৮১০) জেদ্দায় যাত্রবিরতির পর ২৩ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যা ৫টা ৩৪ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
তৃতীয় দফায় ৩১ বাংলাদেশির একটি দল বৈরুত রফিক হারারি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে (এসভি ৮০২) জেদ্দা হয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকায় পৌঁছে।
চতুর্থ দফায় ৩০ লেবানন প্রবাসীর একটি দল সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
পঞ্চম দফায় আরো ৩৬ বাংলাদেশি গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সৌদি এয়ারলাইনসের ইকে-৫৮৪ ফ্লাইটযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এ নিয়ে পাঁচ দফায় ২১৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। আজকের ৫২ জনসহ এ সংখ্যা দাঁড়াবে ২৬৮জনে।
লেবাননে চলমান সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা সমন্বয় করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রত্যাবাসন করা এসব বাংলাদেশি নাগরিককে বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা জানান। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি কিছু খাদ্যসামগ্রী ও প্রাথমিক মেডিক্যাল চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লেবাননে সংঘাত বাড়ার প্রেক্ষিতে আইওএম-ইউএন মাইগ্রেশন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় লেবানন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সরকারের সাথে সহযোগিতা করছে এবং দেশে আগমনের সাথে সাথে তাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে।
লেবাননে আনুমানিক ৭০ হাজার থেকে এক লাখ বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। তবে এর মধ্যে প্রায় ১৮ শ’ জন দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
BSS