আধা ঘণ্টার মধ্যে দলের দুই বর্ষীয়ান নেতাকে হারালো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাদের একজন কুমিল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন। যিনি ওই অঞ্চলে দলের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচরও ছিলেন তিনি। সদ্য প্রয়াত অন্যজন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন।
মঙ্গলবার বেলা দুইটা থেকে আড়াইটার মধ্যে মারা যান এই দুই নেতা। অল্প সময়ে ব্যবধানে তাদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে।
দলের দুই জ্যেষ্ঠ নেতার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন। তাছাড়াও সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও দলের শীর্ষ নেতারাও দুই নেতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন।
সদ্য প্রয়াত একাব্বর হোসেন টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যও ছিলেন এই বীরমুক্তিযোদ্ধা।
মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। সন্ধ্যায় সংসদ ভবনে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার বাদ জোহর মির্জাপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজার পর তাকে দাফন করা হবে।
জানা গেছে, কিডনিজনিত অসুস্থতার কারণে একাব্বর হোসেন নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতেন। গত ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার ধানমন্ডির আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে গেলে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে নেওয়া হয় আইসিইউতে। ২০ অক্টোবর বুধবার সিটিস্ক্যান রিপোর্টে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে চিকিৎসক জানান।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একাব্বর হোসেন ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮সালের সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ব্যক্তিগত জীবনে একাব্বর হোসেন এক ছেলে দুই মেয়ের জনক।
অন্যদিকে বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কুমিল্লার বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আফজাল খান।
তার মেয়ে কুমিল্লার সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা সীমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আফজাল খান ছিলেন কুমিল্লা জেলা ১৪ দলীয় জোটের আহ্বায়ক। তিনি ১৯৬৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ৬৯ সালের গণ-আন্দোলন ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু যতবারই কুমিল্লায় এসেছেন, আফজল খান তার সহচর ছিলেন।
১৯৪৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা নগরীর গোবিন্দপুর খান বাড়িতে জন্ম হয় আফজাল খানের। তিনি ও তার স্ত্রী নার্গিস সুলতানা দুজনেই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন।
dhakatimes