বিডি নীয়ালা নিউজ(১৮ই আগস্ট ২০১৬ইং)এম এম মুজাহিদ উদ্দীন, ঢাকা দক্ষিন প্রতিনিধি: কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত জমিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় চার নেতার নামে আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।আন্দোলনকারীরা জানান, আবাসিক হল তাদের অধিকার, এই অধিকার থেকে বঞ্চিত তারা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে যতবার এই দাবিতে আন্দোলন হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘আশ্বাস’ দিয়ে তা ঠেকিয়েছে। তাদের আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। এবারও যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না। তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
আন্দোলনকারী জানান, ১১ বছরেও একজন শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা শহরে ব্যাচেলর বাসা ভাড়া পাওয়াসহ নানা হয়রানির শিকার তারা। এসব সমস্যার একমাত্র সমাধান হলো আবাসনের ব্যবস্থা করা। শিক্ষার্থীদের কষ্টের বিষয়গুলো যদি ভালোভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপস্থাপন করে, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আবাসন সমস্যার সমাধান হবে বলে বিশ্বাস করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮তম জরুরি একাডেমিক সভায় কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিত্যক্ত জমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ীভাবে দিতে একাডেমিক কাউন্সিল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানায়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কাউন্সিলের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, এবার তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের কাছে থেমে যাবেন না। কারণ, বারবার তাদের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে। এবার আশ্বাস নয়, হল নির্মাণের সুস্পষ্ট ঘোষণা চান তারা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ধর্মঘট শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও কোনো শিক্ষার্থী ভেতরে ঢুকতে পারেননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থীরা সর্বাত্মক ধর্মঘটের কারণে কেউ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকতে পারেননি। কোনো ক্লাস-পরীক্ষা এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষার্থীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে সদরঘাট-গুলিস্তান রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।পরিত্যক্ত কারাগারের জমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার নামে জাদুঘর, গবেষণাকেন্দ্র, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং চার নেতার নামে আবাসিক হল নির্মাণের দাবিতে ১ আগস্ট থেকে টানা আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
২০১৪ সালের ২৩ মার্চ কেন্দ্রীয় কারাগারের জমির দাবিতে জবি কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্রসচিব বরাবর আবেদন করে। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে কোনো সাড়া মেলেনি।