বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এত খারাপ সময় আমরা কখনো দেখিনি। স্বৈরাচার দেখেছি, একনায়কতন্ত্র দেখেছি কিন্তু এ যে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, জাতির সমস্ত অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এটা আমরা অতীতে কখনো দেখিনি।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েক দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম ১৭ জন সাময়িক বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটাও দলীয়ভাবে করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে আছেন যাদের নূন্যতম যোগ্যতা নেই। আজকে প্রশাসনে দলীয় ভিত্তিতে লোক নেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতেও লোক নেওয়া হচ্ছে দলীয় ভিত্তিতে। যেখানে চাকরির জন্য যাবেন সেখানেই দলীয় ভিত্তিতে নেওয়া হয়। এভাবে আজকে পুরো প্রশাসনকে সরকার দলীয়করণ করে ফেলেছে। রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। যারা আগের রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসে আছে, তারা একে একে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে মানুষ কথা বলতে পারে না, কেউ কথা বলার সাহস পায় না। আমি কালকে একটি রেস্টুরেন্টে চা খেতে গিয়েছিলাম। আমি যাওয়ার পর সেখানে সবাই ছুটে আসলো। আমরা যাদের বয়-বেয়াড়া বলি। তারা এসে বলছে, স্যার আমরা কেউ গাজীপুরে থাকি, কেউ ভোলায় থাকি, কেউ রাজশাহীতে থাকি। আমরা কেউ এলাকায় থাকতে পারছি না। আমরা মিথ্যা মামলা ও ওদের (আওয়ামী লীগ) অত্যাচারে পালিয়ে চলে এসেছি। এ রকম অবস্থা বাংলাদেশে এখন শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা। ৫০০-এর অধিক নেতা গুম হয়ে গেছেন। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তার পরেও তারা নির্বাচনের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। আপনারা তো জেনে শুনে এমন একটা নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি করেছেন যেখানে কেউ ভোট দিতে পারে না। আপনারা এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছেন যেখানে কেউ বিচার পায় না। আজকে আপনি যে আদালতেই যাবেন দেখবেন বিএনপি দেখলে এক রকম বিচার আর বিএনপি না হলে অন্য রকম বিচার। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।
মির্জা ফখরুল বলেন, হান্নান শাহ একজন সৈনিক ছিলেন। সৈনিকের কাজ যুদ্ধ করা। তিনি ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমৃত্যু যুদ্ধ করেছেন। ১/১১-তে বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের যে পরিকল্পনা তা রুখে দিতে তিনি সংগ্রাম করেছেন। যার জন্য তিনি জেলেও গিয়েছেন। আজকে দেশের এ অবস্থায় তাকে আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম প্রমুখ।
ban/N