ডেস্ক রিপোর্টঃ শরীর ভালো রাখার জন্য মানুষের আয়োজনের কমতি থাকে না। আবার একটু অসচেতন থাকলে শরীরের সুখ অসুখে পরিণত হতে পারে। ছোট্ট একটা ‘টনিক’ আপনার স্বাস্থ্য ও শরীর ভালো রাখতে পারে। তা হলো—হাঁটা। নিয়মিত হেঁটেই নিজেকে সুস্থ রাখতে পারেন।
তবে হাঁটা শুরুর আগে বেশ কিছু প্রশ্ন মাথায় চলে আসে। কখন হাঁটবেন, কত সময় হাঁটবেন, হাঁটার গতি কেমন হবে ইত্যাদি। হাঁটা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ল্যাবরেটরিজ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. শুভাগত চৌধুরী।
হাঁটতে গেলে প্রথমেই যে ভাবনাটা আসে সেটা হলো; কখন হাঁটবেন? শুভাগত চৌধুরীর উত্তর—যেকোনো সময়েই হাঁটতে পারেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনি হাঁটার জন্য যখন সময় বের করতে পারবেন, তখনই হাঁটবেন। তবে হাঁটার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় বিকেল।
কত সময় হাঁটা উচিত? চিকিৎসক বলেছেন, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা উচিত। তবে আপনি চাইলে সপ্তাহে প্রতিদিন না-ও হাঁটতে পারেন। পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে ১৫০ মিনিট হাঁটলেও আপনি সুস্থ থাকবেন। মানে একজন মানুষের সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হাঁটা জরুরি।
শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলে আরও বেশি সময় ধরে আপনি হাঁটতে পারেন। তবে কখনোই ৩০ মিনিটের কম হাঁটা উচিত হবে না। কারও যদি একবারে ৩০ মিনিট হাঁটার সক্ষমতা না থাকে তাহলে তিনবার প্রতিবার ১০ মিনিট করে ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। অথবা একবার ২০ মিনিট, অন্যবার ১০ মিনিট করে মোট ৩০ মিনিট করে নিতে পারেন। যেভাবে হোক আপনাকে ৩০ মিনিট পূরণ করতে হবে। তবে বয়স্কদের হাঁটার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে বের হন বা হেঁটে এসেই ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁদের জন্য শুভাগত চৌধুরীর পরামর্শ—ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে যাওয়া ঠিক না। ঘুম থেকে ওঠার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর হাঁটতে বের হওয়া উচিত। কারও যদি সকালে অফিসে যাওয়ার তাড়া থাকে তাহলে ঘুম থেকে একটু আগে ওঠার অভ্যাস করুন। এরপর আধঘণ্টা সময় নিয়ে তারপর হাঁটতে বের হোন। দেখবেন দিনটা আপনার কাছে বেশ বড় মনে হচ্ছে।
ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে যাওয়া জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। যাঁরা দিনের শেষ ভাগ, সন্ধ্যা বা রাতে হাঁটেন তাঁদের ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা আগে হাঁটা উচিত। হেঁটে এসে ঘুমাতে যাওয়া উচিত না। হেঁটে এসে শরীর দুর্বল মনে হলে বা ঘুম এলে ঘুমানোর জন্য এই সময়টুকু অপেক্ষা করা উচিত।
খাওয়ার ঠিক আগে বা খাওয়া শেষ করেই হাঁটা উচিত না। যাঁরা সকাল, বিকেল বা সন্ধ্যার পর হাঁটতে সময় পান না, তাঁরা তিন বেলা খাওয়ার পর ১০ মিনিট করে হাঁটতে পারেন। এ সময় হাঁটতে পারলে শরীরের জন্য বেশ উপকার হয়। সুগার ও ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে খাওয়ার পর ১০ মিনিট হাঁটা।
যাঁরা হাঁটতে চান না, তাঁদের জন্য শুভাগত চৌধুরী বলেন, হাঁটার কোনো বিকল্প নেই। মন না চাইলে জোর করে হাঁটতে হবে। সুস্থ থাকতে হলে হাঁটতে হবেই।
এবার হাঁটতে তো বের হলেন। কিন্তু কেমন গতিতে হাঁটবেন? শুভাগত চৌধুরী বলেন, মাঝারি গতিতেই হাঁটা উচিত। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলা যায় এমন হলেই চলবে। তবে হাঁটার গতি এমন পর্যায়ে কমিয়ে আনা ঠিক হবে না, যেন উদ্দেশ্য হাঁটা নয়, গল্প করা। তাহলে গল্পই হবে, হাঁটা আর হবে না।