কয়েদি জীবন
……………….রফিকুল ইসলাম প্রিন্স
এমন ঝুম বৃষ্টিতে ভেজার ইচ্ছে অনেক দিনের।
কিন্তু বৃষ্টির ফোঁটা আমার জন্য যে বিষাদ নিয়ে হাজির হয়,
সে বিষাদকে ঝেড়ে ফেলে,
এক দৌড়ে খোলা আকাশের নিচে গিয়ে বৃষ্টির সাথে সন্ধি হয় না আমার।
বৃষ্টি এলে এখন আমি,
কয়েদি জীবন থেকে উঁকি দিয়ে তাকে দেখি।
প্রতীক্ষার প্রহর গুনি,
প্রর্থনা করি যেদিন আমার মৃত্যু হবে সেদিন যেন এমন ঝুম বৃষ্টি আমার কবর ভিজিয়ে দিয়ে যায়।
সেদিন হয়তো চিরতরে কাউকে কাঁদিয়ে যাবো,
জানি সে সংখ্যা টা এক কি দুই।
আমি চলে যাওয়ার পর আমার শহরের কাকেরা কি আমায় আর কখনো মনে করবে?
আমার ছোট্ট শহরের বুকে কি সেদিন কান্নার স্রোত বয়ে যাবে?
আমি হয়তো ভুলে গেছি অনেক কিছু,
এমন এক বৃষ্টির দিনে হুড তোলা রিকশায় তার হাতে রেখে এগিয়ে চলা সেই দিন গুলোকে।
পাগল প্রেমিক হয়তো সেই দিনটাকে বুকে নিয়ে এখনো বাঁচে।
চলে যাওয়ার আগে আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে,
সে কি ক্ষমা করেছিলো আমায়?
হয়তো করেনি, হয়তো করেছে।
কিন্তু আমি জানি আমার ইশ্বর আমায় ক্ষমা করেননি।
তার ক্ষমা পেলে হয়তো,
আমাকে এমন মৃত্যুর জন্য বেঁচে থাকতে হতো না।
মৃত্যুর আগে একবার হারুন কাকার টং এ চা খেতে যাবো,
কলেজ ড্রেসে যেতে পারলে বোধহয় হারানো দিনের গন্ধ পেতাম।
চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে কাকা আর কাকির মিষ্টি ঝগড়া দেখতে পেলে,
বাঁচতে ইচ্ছে হতো।
অথচ আজ যেদিকে তাকাই,
স্বপ্ন ভাঙার হাহাকার,
কষ্টদের গোঙানির শব্দ,
অতীতের চিৎকার,
আর এক পৃথিবী অনুশোচনা।
ওরা আমায় ঘুমোতে দেয় না,
মধ্য রাতে চিৎকার দিয়ে আমার ঘুম ভাঙে।
আমি চিরদিনের মতো ঘুমোতে চাই,
এক আকাশ অভিশাপ নিয়ে কেউ বাঁচতে পারে না।
এমন বর্ষা মুখর দিনে সব কিছু ফেলে নিরবে পালিয়ে যেতে চাই।