জুয়েল ইসলাম, তারাগঞ্জ, রংপুর প্রতিনিধিঃ কলেজের গেটের সাথে ময়লার বড় স্তুপ হয়েছে। আর এই ময়লার স্তুপ থেকে উদ্ভট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
কলেজে আসতে হলে গেটের সামনে নাক, মুখ চেপে ধরেও গন্ধ আটকায় না বমি আসে। এটা কলেজের গেট না ময়লার ডাস্টবিন বোঝার উপায় নাই। আমাদের দুঃখের কথা কাকে বলবো। ময়লার স্তুপের ছবি তুলতে দেখে এমন আক্ষেপ করে বলছিলেন তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রিফাত। এমন আক্ষেপ শুধু রিফাত এরই নয় সেখানে পড়তে আসা হাজারো শিক্ষার্থী ও পথচারীদের।
রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের গাঁ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি কলেজ।
একই মাঠে গড়ে উঠেছে শিশু নিকেতন এবং বালিকা স্কুল এন্ড কলেজসহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই একটি ফটক ব্যবহার করতে হয়।
আর সেই মুল ফটকটির পাশে ময়লার স্তুপে পরিণত হয়েছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে এই কলেজসহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী, ময়লার স্তুপের ফলে দূষিত হচ্ছে এর আশপাশের পরিবেশ, নষ্ট হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য, ছড়াচ্ছে উদ্ভট দুর্গন্ধ। এই আবর্জনার দুর্গন্ধে শিক্ষার্থী ও পথচারীদের চলাচল দায় হয়ে পড়েছে।
কলেজের ফটকের সামনে নাক-মুখ চেপে ধরে চলতে দেখা গেছে বিভিন্ন কলেজ থেকে আসা এইচএসসি পরিক্ষার্থীদের। সেখানে দাঁড়িয়ে কথা হয় তারাগঞ্জ জিগাতলা বিএম কলেজের শিক্ষার্থী রশিদ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ভাই এই গেটের সাথে ময়লা আবর্জনার যে কি দুর্গন্ধ তা বলে বোঝাতে পারবো না। দুর্গন্ধের কারণে পরীক্ষার হলে বসেও শান্তি মতো পরীক্ষা দিতে পারছি না। তারাগঞ্জের মধ্যে এত বড় একটা প্রতিষ্ঠান তার মেইন গেটে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। এই ময়লার গন্ধ নাক, মুখ চেপে ধরেও যাচ্ছে না। তাই আমাদের দাবি এই জায়গা থেকে দ্রুত ময়লা আবর্জনা সরানো হোক।
কলেজের মূল ফটকের সামনে মহা সড়কের গা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি হোটেল রেস্তোরাঁ। ময়লার স্তুপের ছবি তুলতে দেখে ভাই ভাই মিষ্টি মুখের কর্মচারী হাসমত ইসলাম বলেন, ভাই ছবি তোলছেন ময়লাগুলা কি সরাইবে? এ মায়লার দুর্গন্ধের জন্যে দোকানের ভিতর মানুষ বসিবার পাওছেনা।
একে তো কলেজের গেটের সামনোত ময়লার ভাগাড় তার উপর মানুষ প্রসাব করিয়া আরো দুর্গন্ধ তুলি ফেলাইছে। কখনো এই কলেজ গেট কাউকেও পরিষ্কার কইরার দেখ নাই।
তারাগঞ্জ ও/এ বালিকা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের সাথেই আমাদের এই প্রতিষ্ঠান। আশপাশের দোকানের ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলে একটি বড় স্তুপ তৈরি করেছে। এ ময়লা স্তূপের দুর্গন্ধে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিতে পারছে না। দুর্গন্ধের জন্য অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হচ্ছে। আমরাও অফিসে ভালোভাবে থাকতে পারছি না। আমি বারবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহোদয় কে বিষয়টি অবগত করেছি। কিন্তু এখনো তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কলেজের মুল ফটকের পাশে ময়লার স্তুপ সরানোর কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কি না? প্রশ্নের জবাবে তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বারী মন্ডল মুঠোফোনে বলেন, এটা তো রাস্তার ময়লা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এর জন্য ইউনিয়ন পরিষদ, শহর-নগর আছে। এখন আমি রাস্তা পরিষ্কার করবো? এ ব্যাপারে আমাকে ইউএনও মহোদয় কোনদিন বলেনি। আমি নিজেও ইউএনও মহোদয়কে বলিনি। বলে কি করবো? অনেক গুলো বিষয় বললে হয় না। সিদ্ধান্ত হয়, পরবর্তীতে অন্যভাবে পাচলে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে দ্রুত ময়লা সরানোর ব্যবস্থা করছি।