সিরাজগঞ্জ থেকে, মারুফ সরকারঃ কালের বিবর্তনে পরিবর্তন এসেছে নরসুন্দরদের কার্যপদ্ধতিতে। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে নরসুন্দরদের পেশায়। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে নরসুন্দররা ‘নাপিত’ নামে পরিচিত। একটা সময় ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলেগুলোতে এরা পেশাগত কাজে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। কয়েক দশক আগেও সকাল হলেই গ্রামের মেঠোপথ ধরে ধুতি দিয়ে বানানো খতিতে ঝোলা সেলাই ছাড়া ব্যাগ) ক্ষুর, কেঁচি, সান দেয়ার পাথর, সাবান, ফিটকারিসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে নরসুন্দররা ছুটে চলত খদ্দেরর আশায়। শুধু প্রয়োজন মেটানো নয়, সুন্দর হয়ে ওঠার সময়টুকু খদ্দেররা আরাম-আয়েসে কাটাতে চায়।

চায় আধুনিক উপকরণের ছোঁয়া।সেজন্যেই গড়ে উঠেছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক সেলুনের ব্যবসা। আধুনিক সেলুন শুধু অভিজাত শহরেই নয় ক্রমান্বয়ে জেলা, উপজেলা এমনকি এখন ইউনিয়ন পর্যন্ত চলে এসেছে। এখন গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে গদিমোড়া চেয়ার, বাঁধানো আয়না, মাথার উপর ঘুরতে থাকে বৈদ্যুতিক পাখা, ফোম, ক্রীম, সুবাসিত লোশনসমৃদ্ধ চুল কাটানো, সেইভ করার সেলুনের প্রতি আগ্রহ সবার।

এখন আর চোখ পড়ে না সাবানের ফেনা মুখে দাড়ি কামানো, ছোট বাটিতে পানি নিয়ে পাথরে বা মোটা চামড়ায় ঘষে ক্ষুরের ধার তোলা। সে সময়ে একেকটি এলাকায় নির্দিষ্ট করে একেকজন নরসুন্দর কাজ করতো। কখনও সারাবছরের পারিশ্রমিক দেয়া হতো। শুধু নবান্নের সময় এ পারিশ্রমিক দেয়া হতো।নরসুন্দররা একাধারে কয়েকদিন তাদের নিদিষ্ট এলকায় অবস্থান করে পারিশ্রমিক তুলে ফিরে আসতো নিজ বাড়িতে। নরসুন্দরদের এ রেওয়াজ আজ শুধু ইতিহাস। ক্রমেই এ পেশায় পরিবর্তন হতে থাকে। আস্তে আস্তে গ্রামের সঙ্গে নরসুন্দরদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। বছরে মাত্র একারের পরির্বতে নগদায়নের মাধ্যমে পারিশ্রমিক নেয়ার রেওয়াজ শুধু হয়। সুশিক্ষিত তরুণরাও চলে আসে এ পেশায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে