মাফি মহিউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকেঃ অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজীবিদের পেনশন নিয়ে টেনশন নাই শ্লোগান নিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসকে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত ঘোষনা করে আমি ও আমার অফিস দুনীর্তিমুক্ত এমন সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল খালেক।
উপজেলা হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল খালেক জানান, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে ৭৮জন কর্মকর্তা ও ১৩৮৩ জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। এ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর বেতন ভাতা নিতে এসে যাতে কোন হয়রানীর শিকার না হয় এবং প্রতিবছর সরকারী চাকুরী থেকে যারা অবসর গ্রহন করেন তাদের পেনশন পেতে যাতে কোন ঝামেলা পোহাতে না হয় সেজন্য পেনশন প্রাপ্তদের হয়রানী বন্ধ করতে পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২৭/১২/২০১৭ সালে যোগদানের পর থেকে মোট ১৭ জন অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবিকে তাদের পেনশন বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনকে দুই দিনের মধ্যে , ৩ জনকে তিন দিনের মধ্যে এবং বাকি ২ জনকে চারদিনের মধ্যে তাদের প্রাপ্ত পেনশন বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসে পেনশন নিতে আসা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মকছুদার রহমান বলেন, আমি গত ২০১৭ সালের মার্চ মাসের ১৪ তারিখে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করি। বর্তমান উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল খালেকের সততার কারনে ও উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিস দুনীর্তিমুক্ত হওয়ায় আমি চলতি ২০১৮ সালে পেনশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই দিনের মধ্যে এপ্রিল মাসের ৪ তারিখে আমার পেনশন পেয়েছি।
পেনশন নিতে আসা রেনু বেগম নামে এক বৃদ্ধা বলেন, বাবা আমার স্বামী জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রকৌশলী ছিলেন তিনি ১৯৯৮ সালে চাকরী থেকে অবসর গ্রহন করেন। তারঁ পেনশনের জন্য তিনি দীর্ঘদিন অফিসে ঘোরাঘুরির পর মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর আমিও অফিসে এসেছিলাম আমার স্বামীর পেনশন নিতে কিন্তু তৎকালিন অফিসারদের দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে না পারায় পেনশন পাইনি। বর্তমান অফিসারের কাছে আসলে তিনি দুই দিনেই আমার স্বামীর পেনশন দিয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল খালেক বলেন, প্রথম ইএলপিসি( প্রত্যাশিত শেষ বেতনপত্র) ইস্যুর আগেই একজন সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীর যাবতীয় তথ্যাদি যাচাই করে ইএলপিসি ইস্যু করা হয়। চাকুরী জীবনে কোন পাওনা থাকলে এবং ভুল বেতন নির্ধারন করা থাকলে তাও সংশোধন করে দেওয়া হচ্ছে। মোট কথা যাতে কোন অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবি কোন হয়রানীর স্বীকার না হয় সে কথা মাথায় রেখে সেবা প্রদান করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে মডেল উপজেলা হিসাবে বাস্তবায়ন করার জন্য ইতিমধ্যে এ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ও মাদকমুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। আগামীতে সরকারী সব দপ্তরকে দুনীতিমুক্ত ঘোষনা করা হবে। তাছাড়া উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ডোমার উপজেলা হিসাব রক্ষন অফিসকে দুর্নীতিমুক্ত করে শ্রেষ্ট কর্মকর্তা নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার সব রকম প্রচেষ্টা বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে সকল সহযোগিতা করা হবে।