সাব্বির আলম বাবু, প্রতিনিধিঃ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলার ৪টি আসনে চলছে ভোটগ্রহণ। তবে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ভোট কেন্দ্রগুলোতে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ-আনসার সদস্যরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়েনি। তবে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেলার কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
লালমোহনের ডাক্তার আজহার উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত ১৩৯ ভোট কাষ্ট হয়েছে। এই কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ৪ হাজার ১৩০ জন।
এছাড়াও একই উপজেলার গজারিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বেলা ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৪৩৯ ভোট কাষ্ট হয়েছে। তবে এ কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যার তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার।
ভোটারেরা জানিয়েছেন, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কর্মীসমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছোট ছোট যানবাহনে করে তাদেরকে কেন্দ্রে নিয়ে আসছে। জেলার চারটি আসনে ৫২৬টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে ২৬টি কেন্দ্র দুর্গম চরাঞ্চলে। এই ২৬টি কেন্দ্রকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান জানান, জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ লাখ ৫৩ হাজার। জেলার চারটি আসনে মোট ৫২৬টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ভোলা-১ (সদর) আসনে ১১৪টি, ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনে ১৩৮টি, ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে ১১৯টি ও ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে ১৫৫টি।
এই চার আসনে মোট ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ভোলা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ (নৌকা), জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মো. শাহজাহান মিয়া (লাঙ্গল), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) প্রার্থী মো. ছিদ্দিকুর রহমান (মশাল)। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৭৪ হাজার ৮১৪ জন।
ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আলী আজম মুকুল (নৌকা), জাতীয় পার্টি (জেপি) প্রার্থী মো. গজনবী (বাইসাইকেল), বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী মো. আসাদুজ্জামান (ডাব) ও তরিকত ফেডারেশন প্রার্থী শাহেনশাহ মো. শামসুদ্দিন মিয়া (ফুলের মালা)। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৬৫ হাজার ৪৪০ জন।
ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (নৌকা), জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রার্থী মো. কামাল উদ্দিন (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী মো. আলমগীর (ডাব) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) জসিম উদ্দিন (ঈগল)। এ আসনে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫৯ হাজার ৮১৭ জন।
ভোলা-৪ (চরফ্যাশন-মনপুরা) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব (নৌকা), জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী মো. আলাউদ্দিন (আম), তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. হানিফ (সোনালী আঁশ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল ফয়েজ (মাথাল)। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৫৩ হাজার ৬৮১ জন।
ভোলা জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান আরও জানান, জেলার চারটি আসনে ৫২৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৬টিকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দু’জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য রয়েছে। অধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে পুলিশের সংখ্যা তিনজন। এছাড়া ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন সে জন্য ৬ স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী মাঠে টহল দিচ্ছে। সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরাও মাঠে আছে। নির্বাচনে জেলায় ২৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৮ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আছে।