সাব্বির আলম বাবু, ভোলা প্রতিনিধিঃ সুপ্রাচীনকাল থেকেই ভোলা পান, নারিকেল, ধান, সুপারির জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর বিপুল পরিমান ধানের পাশাপাশি এখানে সুপারিও উৎপাদন করা হয়।
এখানকার গ্রামগুলোত এখনো হাজার হাজার হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক সুপারির চাষে অনেকের আগ্রহ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলার ৯ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৮ হাজার ৬০ মে:টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে।
অতি প্রাচীনকাল থেকেই এখানে বিস্তীর্ণ ভূমিতে সুপারির চাষ করা হয়। গ্রামীণ পথের দুই পাশে অগনন সুপারির বাগান চোখে পড়ে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখান থেকে সুপারি পাঠানো হয়। কাঁচা সুপারির পাশাপাশি এখানে শুকনো সুপারিরও বেশ কদর রয়েছে। বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসে সাধারনত সুপারির ফুল আসে। আর কার্তিক-অগ্রাহায়ন সুপারির ভরা মৌসুম। এই সময় গাছ থেকে সুপারি পাড়া হয়। পাকা সুপারিকে রোদে শুখিয়ে শুখনো সুপারি করা হয়। এই সুপারি অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। এছাড়া কাঁচা-পাকা সুপারিকেও ভিজিয়ে দীর্ঘদিন রাখা যায়। স্থানীয় ভাবে এর বেশ চাহিদা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় মোট সুপারির মধ্যে সদর উপজেলায় বাগান ও বসত আকারে দেড় হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। দৌলতখানে ৯শ’ হেক্টর, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২হাজার ৭শ’ হেক্টর, তজুমুদ্দিনে ৭৫০ হেক্টর, লালমোহনে ১৪শ’ হেক্টর, চরফ্যাসনে ১ হাজার ৪২০ ও মনপুরায় ৫শ’ হেক্টরসহ মোট ৯ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. ফকরুল ইসলাম জানান, সুপারি গাছে পরিচর্যায় তেমন কষ্ট করতে হয় না। রোগ বালাইও খুব একটা হয় না। রোপণের পর ৬-৭ বছরের মধ্যেই গাছে ফলন আসে। প্রায় ৫০ বছর পর্যন্ত একটি গাছ সুপারির ফলন দিয়ে থাকে। সুপারির ব্যবসায়ী মো. ইছাক মিয়া বলেন, এ বছর সুপারির দাম ভালো রয়েছে। কাঁচা-পাকা প্রতি ভি (৪০০) সুপারি ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শুকনো সুপারির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। এ বছর সুপারির ফলন ভালো হওয়াতে তাদের লাভ হচ্ছে বলে জানান তিনি। উকিলপাড়া এলাকার সুপারি ব্যবসায়ী মো. কামাল হোসেন বলেন, এ পর্যন্ত তিনি ৩০ লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করেছেন। গত বছরের চেয়ে দাম ভালো পাওয়াতে তিনি খুশি।