ersad

বিডি নীয়ালা নিউজ(৪ই ফেব্রুয়ারী১৬)- ঢাকা প্রতিনিধিঃ  জাতীয় পার্টিতে (জাপা) এরশাদ-রওশনের দৃশ্যমান বিরোধ অনেকটাই কৌশলগত। দুই পক্ষের কেউই সরকারকে চটাতে চায় না; বরং সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেই জাপাকে আলোচনায় জিইয়ে রাখতে চায় তারা। এ জন্যই কিছুদিন পরপর দলের সাংসদদের মন্ত্রিসভা ছাড়ার আলোচনা তোলা হয় বলে দলটির দায়িত্বশীল কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে।
সর্বশেষ কো-চেয়ারম্যান নিয়োগ এবং মহাসচিব বদল নিয়ে দলের ভেতর সৃষ্ট অস্থিরতাও শেষমেশ সরকারে থাকা না-থাকার আলোচনায় গিয়ে ঠেকেছে। যদিও এরশাদ নিজে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত পদে বহাল আছেন। বলছেন, বিশেষ দূত বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে সম্মান দিয়েছেন, তাই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়া তিনি এ পদ ছাড়বেন না।
জাপায় সাম্প্রতিক বিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘এটা যে পরিকল্পিত, ঠিক তা নয়। তবে এটা ঠিক যে, ম্যাডাম (রওশন) এরশাদ সাহেবের পদক্ষেপের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেননি। কিছু লোক পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। তিনি (রওশন) চট করে মুখ খোলেন না। এটা তাঁর স্বভাব। তাই বলে এটা সাজানো খেলা বলা যাবে না।’
কিছুদিন পরপর মন্ত্রিসভা ছাড়ার আওয়াজ তোলা, মহাসচিব পদে দুই বছরে দুই দফা রদবদল এবং সর্বশেষ এরশাদ ছোট ভাই জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান ও রওশনপন্থীদের বিপরীতমুখী তৎপরতা—এসবের পেছনে উভয় পক্ষের নেতাদের ছোট ছোট নানা স্বার্থ কাজ করছে। তবে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাসহ মোটা দাগের নীতিগত কিছু বিষয়ে এরশাদ ও রওশনের মধ্যে বোঝাপড়া আছে বলেও উভয় পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা মনে করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব নেতা বলেন, সরকারও এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। কারণ, গত কিছুদিন জাপা যেভাবে গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে, তাতে বিএনপি আলোচনা থেকে কিছুটা আড়ালে চলে গেছে।
গত রোববার জাপার সভাপতিমণ্ডলীর সভায় দলের নবনিযুক্ত কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, সরকার অস্থিতিশীল হয় এমন কোনো পদক্ষেপ তাঁরা নেবেন না। তাঁরা চান, সরকার বাকি তিন বছর ক্ষমতায় থাকুক। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা মত দিয়েছেন যে জাপার সাংসদদের মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। তবে, এ বিষয়ে দলের চেয়ারম্যান সময়মতো পদক্ষেপ নেবেন।
জাপার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশনের সঙ্গে কথা বলেই এরশাদ গত ১৭ জানুয়ারি জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান এবং নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী ঘোষণা করেন। আর মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব পদ থেকে সরান তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে। মহাসচিব পদে হঠাৎ পরিবর্তন এবং কো-চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে রওশন প্রশ্ন তুললেও শেষ পর্যন্ত তিনি তা মেনে নিয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে