জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ পাঁচ ছাত্র সংগঠন। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি সংগঠনের নেতাদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করায় এটিকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধমীয় উগ্রবাদী, সন্ত্রাসবাদী, স্বাধীনতাবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী, হত্যা-খুন-ধ্বংসের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অধীনস্থ রাজাকার বাহিনী, আলবদর বাহিনীর সদস্য হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের (তৎকালীন ইসলামী ছাত্রসংঘ) সদস্যরা গণহত্যা, গণধর্ষণ ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটনে পৈশাচিক ভূমিকা পালন করেছিল।
তারা আরও বলেন, স্বাধীনতার পর সংবিধানের (৩৮) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রসংঘকে (পরে ইসলামী ছাত্রশিবির) নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালে সংবিধানের (৩৮) ধারার উল্লেখিত অনুচ্ছেদগুলো বাতিল করে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর পুনরায় বৈধভাবে রাজনীতি করার সুযোগ পায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। জিয়ার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির আবারও প্রকাশ্যে রাজনীতিতে আবির্ভূত হয়। জিয়া ও এরশাদের ছত্রছায়ায় আশির দশকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির আবারও তাদের সন্ত্রাসবাদী রাজনীতি চালু করে।
ছাত্রনেতারা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ স্বাগত জানায়। একইসাথে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সব সাংগঠনিক পর্যায়ে যুক্ত ব্যক্তিদেরও সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তালিকা প্রকাশ এবং জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টারসহ মৌলবাদী, সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের সাথে সম্পৃক্ত সব প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ছাত্রলীগ (জাসদ) এর সভাপতি রাশিদুল হক ননী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহাম্মেদ, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস আলো, সাধারণ সম্পাদক অদিতি আদ্রিতা সৃষ্টি, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রবিন হোসেন জয় এবং জাতীয় ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান।
Jag/N