কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী: তিস্তা নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ নাইসের এখনো সন্ধান মেলেনি। ছেলের শোকে বার বার মুর্চা যাচ্ছে বাবা মা, ছেলের শোকে প্রায় খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে তারা। ছেলের মুখ খানি একনজর দেখার জন্য পাগলের মতো বার বার ছুটছে তিস্তা পারে। নাইসের মা বলেন, আমার ছেলেকে আমি অনেক ভালোবাসি। আমার বাবা কোথায় আছে আমাকে খুঁজে বের করে দেন। আমার বাবাকে আমি কোথায় পাবো কান্না জড়িত কণ্ঠে এই কথা গুলো বলছিলেন নিখোঁজ নাইসের মা নাজমা বেগম।

রবিবার সকাল ১১টায় নিখোঁজ নাইসের বাড়ী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের গনেশের বাজার সর্দার পাড়া গ্রামে গেলে তার বাবা মোনাব্বর হোসেন কপালে হাত দিয়ে অশ্রæসিক্ত নয়নে বলেন আমার দুই ছেলে এক মেয়ে, মেয়েটি অনেক আগে মারা গেছে নাইস পরিবারের মধ্যে বড় ছেলে সে গংগাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নে হরিনাথ এলাকায় তার নানা বাড়ীতে মানুষ হয়েছে। সেখান থেকে সে পড়াশুনা করতো নাইস সবচেয়ে মেধাবী ছিলেন, নাইস কে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতাম উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে মানুষের মত মানুষ হবে কিন্তু সে স্বপ্ন এখন গুড়েবালী।

নিখোঁজ নাইস পূর্বদলিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন। পরে তুলসীর হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে জে.এস.সি ও এস.এস.সি জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন। পরে আনোরমারী কলেজে একাদশ শ্রেনিতে ভর্তি হয়ে পড়াশুনা শুরু করেন সেখান থেকে এবার চলতি এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। কিন্তু ঘটনার দিন পরীক্ষা বন্ধ থাকায় ছয় বন্ধু মিলে বড়াইবাড়ী তিস্তা নদীতে গোসল করতে গেলে সবাই তিস্তা নদীতে হাবুডুবু খাচ্ছিল, নদীতে থাকা এক মাঝি নৌকা নিয়ে চার বন্ধুকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেও নাইস ও মুন্নাকে উদ্ধার করতে পারেন নাই তারা ওই তিস্তা নদীতে তলিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুড়ী দল দুই দিন ধরে চেষ্টা করেও তাদেরকে দুজনকে উদ্ধার করতে পারে নাই। ঘটনার দুইদিন পর স্থানীয় লোকজন মুন্নার লাশ তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করেন। কিন্তু ৬দিন অতিবাহিত হলেও নিখোঁজ নাইসের কোন সন্ধান মেলেনি। রংপুর ফায়ার সার্ভিস এর ডুবুড়ী দল পুণ:রায় তিস্তা নদীতে অভিযান পরিচালনা করলে হয়তো বা নিখোঁজ নাইসকে উদ্ধার করা সম্ভব হতো বলে পরিবারের দাবী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে