দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তের ১৬৮তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৫২ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৯ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৯০৭ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গতকাল মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ মৃত্যুর হার দশমিক ০১ শতাংশ বেশি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৫২ জন। গতকালের চেয়ে ৬৭২ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ৬২৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫৭ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬০ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১১ হাজার ৩৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ২৬৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৩৬ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ৯৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৪০১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৫৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৯২ হাজার ৬২৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১০ হাজার ৫৯৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৫৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৫৬০টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯১টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১১ হাজার ৩৫৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৯৪৩ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৫৮৭টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৩ হাজার ৮২ জন; ৭৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৮২৫ জন; ২১ দশমিক ১২ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৫ জন এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ ঊর্ধ্ব ৩৩ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর শতকরা হারে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৯ জন, যা দশমিক ৪৯ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন, যা দশমিক ৯০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯৪ জন, যা ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৪৪ জন, যা ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫২২ জন, যা ১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৮৭ জন, যা ২৭ শতাংশ এবং ৮২ বছরের বেশি বয়সী মারা গেছেন ১ হাজার ৯০৭ জন; যা ৪৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮ জন, খুলনা বিভাগে ১ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৮৮১ জন; যা ৪৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৬৮ জন; যা ২২ দশমিক ২২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৫৯ জন; যা ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩১৭ জন; যা ৮ দশমিক ১১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৫৩ জন; যা ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৮৫ জন; যা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৬১ জন; যা ৪ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৩ জন; যা ২ দশমিক ১২ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৫৫০ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ৬২০ জন। ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২২৫ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৫৪৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৬৬ হাজার ১৬৬ জনকে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ২১৯ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৬৮৫ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৪ লাখ ২৬ হাজার ১৩৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৪০০ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৩ হাজার ২৬৩ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৪৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৭৯৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১০ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৭টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২২০ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৬২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২১ জন ও শয্যা খালি আছে ১৮টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮২৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৬০৭টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০১ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৮টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ২৯২ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৯৬৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩২ জন এবং খালি আছে ২১৩টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৭৪টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪১৩টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৭৬টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে? কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া িি.িফমযং.মড়া.নফ এর ঈঙজঙঘঅ কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা যঃঃঢ়:/ধঢ়ঢ়.ফমযং.মড়া.নফ/পড়ারফ১৯-পড়সঢ়ষধরহ লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার সংখ্যা, ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৫৫৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৪৫ জন, রংপুর বিভাগে ৪১ জন, খুলনা বিভাগে ৭৮ জন, বরিশাল বিভাগে ২৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৬৫ জন, সিলেট বিভাগে ৫৩৬ জন এবং ময়মনসিংহে ৮ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ২৩৭টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৫৩০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে ২০৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৯৭৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৯২ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫৫টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩০৩ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ২২ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ২৬ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৪৫ হাজার ৩৫৩ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২১ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯০৪ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৫ হাজার ৩১৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২১ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ি সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ২৭৮ এবং এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৯৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।