কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাবার পথে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক গৃহবধুকে ছুরিকাঘাত করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে দূর্বত্তদের বিরুদ্ধে।
গতবুধবার(03 আগষ্ট) সকাল দশটায় শহরের রুবীর মোড় এলাকায় এ হামলার ঘটনাটি ঘটে।হামলার শিকার ওই গৃহবধু শহরের খাস নওগাঁ মহল্লার সুইপার কলোনীর বিশ্বনাথ দাসের স্ত্রী রানী বাঁশফোর। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিকৎসাধীন আছেন ওই গৃহবধু।
হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের। ভূক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়,শহরের খাস নওগাঁ মহল্লার সুইপার কলোনীর বাসিন্দা রানী বাঁশফোর এর স্বামী বিশ্বনাথ দাস সেনানিবাসে ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করেন।
স্বামীর চাকুরীর কারনে রানীদাস বাঁশফোর তাঁর ছেলে শিব কুমারকে সঙ্গে নিয়ে ওই কলোনীতে মায়ের বাড়িতে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন।
সম্প্রতি সেখানে মাদকের রমরমা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। ওই কলোনীতে থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ করে আসছিলেন ওই নারী।সঙ্গত কারনেই মাদক ব্যবসায়ীদের রোসানলে পড়তে হয় তাকে। এক সময় ওই এলাকায় তুলশী কুমার চৌধুরী নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি অভিনব কায়দায় ওই এলাকায় গাঁজার ব্যবসা শুরু করেন। সেখানেও প্রতিবাদে মাঠে নামেন রানী বাঁশফোর।
ওই মুহুত্বে তুলশী কুমারের ক্রোধের মুখে পড়তে হয় তাকে। এর এক পর্যায়ে তুলশী কুমার তার স্ত্রী পারুলকে দিয়ে সুকৌশলে হামলার পরিকল্পনা করে। গতকাল বুধবার সকালে অসুস্থজানিত কারনে 250 শয্যা বিশিষ্ট নওগাঁ জেলারেল হাসপাতালে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে রিক্সাযোগে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছিলেন রানীবাঁশফোর।
পথিমধ্যে শহরের রুবীর মোড় এলাকায় পৌঁছলে রিকশাটি থামিয়ে জোরপূর্বক তাঁদেরকে রাস্তার আড়ালে নিয়ে যায় দূর্বত্তরা। সেখানে ছেলের সামনেই মা রানী বাঁশফোরকে ছুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে তুলশী কুমার চৌধুরীর স্ত্রী পারুল সহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী।
এক পর্যায়ে তাদের মাঝে ধস্তাধস্তি শুরু করে প্রাণপন চেষ্টায় সেখান থেকে ছিটকে পালিয়ে আসেন রানী বাঁশফোর। এর পর মাকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলে শিব কুমার।
সেখানে ভতি করা হলে অবস্থার আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।
বর্তমানে সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ওই নারীরানী বাঁশফোরের ভাই রাজা বাঁশফোর বলেন, আমার বোন মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হতে হয়েছে। তুলশী কুমার তার স্ত্রীকে দিয়ে এখানে গাঁজার ব্যবসা করে। এর প্রতিবাদ করাটাই আমার বোনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা আমার বোনকে মেরেও শান্ত হয়নি।
ওইদিন বিকালে প্রায় শতাধীক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমিসহ আমাদের পুরো কলোনীর বাসিন্দাদের উপর আবারো হামলা চালানো হয়েছে।
পরিবারের অনেকেই এখন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি। এখন মামলা করতে থানায় যেতেও আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তিনি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত তুলশী কুমার চৌধুরী বলেন, কিছুদিন আগে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যদের উপর রানীর পরিবারের সদস্যরা হামলা করেছিল।
আমি আইনের আশ্রয় নিয়ে লড়ে যাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে তাদের উপর হামলার অভিযোগটি সঠিক নয়। এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে প্রতিবেদককে সামনাসামনি দেখা করতে অনুরোধ জানান তিনি।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচাজ (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সুইপার কলোনীতে হামলান ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্ধা গ্রহন করা হবে।