বিডি নীয়ালা নিউজ(৫জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ দিনাজপুর-৫ আসনের পার্বতীপুর উপজেলায় ১০৩টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা নতুন বই পায়নি। নতুন বছরের শুরুতে প্রাথমিক স্কুলের নবীন শিক্ষার্থীরা বই উৎসবে মেতে উঠলেও এ থেকে বঞ্চিত দরিদ্র পরিবারের প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী।
গত রোববার স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের নিয়ে শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বইয়ের জন্য গেলেও তাদের বই দেয়া হয়নি। এসময় শিক্ষা অফিসার বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে সমাধান করার আশ্বাস দেন। দু’ঘণ্টা অবস্থানের পর তারা উপজেলা চত্বর ত্যাগ করে।
১০৩টি স্কুলই একটি প্রকল্পের (রস্ক- রিচ আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন) পরিচালিত ‘আনন্দ স্কুল’ এর আওতাধীন। আনন্দ স্কুলের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করতে ২০০৫ সালে সারাদেশের ৪০টি উপজেলার সাথে পার্বতীপুর উপজেলায় এ প্রকল্পের আওতায় পার্বতীপুরে ৩৩৭টি স্কুল চালু করা হয়। অভিভাবকদের অজ্ঞতা, অসচেতনতা ও আর্থিক অভাব অনটনের কারণে স্কুলের শিক্ষাগ্রহণ থেকে বঞ্চিত শিশুদের বই পুস্তক, জামা কাপড়, স্কুল ব্যাগ ও নগদ অর্থ দিয়ে এসব স্কুলে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও তারা স্কুল ঘর নির্মাণ ও ঘর ভাড়া বাবদ প্রতিমাসের চার থেকে পাঁচশ টাকা করে দেন। প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মাসে ৫০ টাকা এবং ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মাসে ৮০ টাকা করে পেত। প্রতি শিক্ষক ভাতা হিসেবে মাসে ৩ হাজার টাকা পেতেন।
২০১৫ সালের ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় এসব স্কুলের ৫২৬ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়। প্রকল্পটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন হলেও দেশের প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি সাহায্য সংস্থা (এনজিও) এসব স্কুল মনিটরিং দায়িত্ব পায়।
মৌপুর দক্ষিণপাড়া আনন্দ স্কুলের জাহাঙ্গীর আলম, সোনাপুর মাঝাপাড়া আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা নাহিদা পারভীন ও হোসেনপুর আনন্দ স্কুলের শিক্ষিকা লাভলী বেগম বলেন,‘স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় আড়াই হাজার ঝরে পড়া শিক্ষার্থী ও শতাধিক বেকারের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’
পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। তবে প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) ড. এম মিজানুর রহমান তাকে ফোনে এ প্রকল্পের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এব্যাপারে তিনি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাড. মোস্তাফিজুর রহমান এমপি’র সাথে যোগাযোগের পরার্মশ দিয়েছেন।’
আনন্দ স্কুলের প্রশাসনিক ও অর্থ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিং এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর (টিসি) শাজিদ আল মোহিত বলেন, ‘প্রকল্প পরিচালক এর মৌখিক নির্দেশে এসব স্কুলের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।’
রস্ক প্রকল্পের (আর ও এস সি) প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ড. এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্কুল প্রতিষ্ঠার পরে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ও তদন্তের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীর টেলিফোনিক নির্দেশে প্রকল্পের ২য় পর্যায়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’