জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের মামলায় ১৭ বছর পলাতক থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন দুই আসামী।
তাদের অনুপস্থিতিতে আদালত দোষী সাব্যস্ত করে সাজা প্রদান করেন। রায়ে টুললু মাহমুদকে (৪২) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তার সহযোগী জোবেদা বেগমকে (৪৯) ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে (২) আত্মসমর্পণ করেন তারা। চলতি বছরের ১২ জুন নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহাবুবুর রহমান ওই সাজা প্রদান করেন। তারা হলেন, টুললু মাহমুদ ওই উপজেলা সদরের দক্ষিণ রাজীব গ্রামের ইসহাক আলীর ছেলে এবং জোবেদা বেগম একই গ্রামের মামুন রশীদের স্ত্রী।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা শহরের দক্ষিণ রাজীর গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অপরহরণ করেন প্রতিবেশী টুললু মাহমুদ ও জোবেদা বেগম। এ ঘটনার দুইদিন পর ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে টুললু মাহমুদ ও জোবেদা বেগমসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের তিন দিন পর অপহৃত স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলার তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ মে টুললু মাহমুদ ও জোবেদা বেগমকে পলাতক দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন থানার উপ-পরিদর্শক মো. নুরুল হুদা। অপর ৪ ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রমান না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চুরান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।
ওই রায়ে প্রধান আসামী টুললু মাহমুদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তাঁর সহযোগী জোবেদা বেগমকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করাসহ বিচারক ওই রায় দেন।
তিনি বলেন, ‘২০০৫ সালে মামলা দায়েরে পর থেকে রায় ঘোষনার আগ পর্যন্ত ওই দুই আসামী পলাতক ছিলেন। আদালতের রায়ের পাঁচ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর রবিবার দুপুরে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পন করেন তারা। বিজ্ঞ বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নীলফামারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর স্পেশাল পিপি আল মাসুদ আলাল বলেন, ওই মামলার পাঁচ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২০২২ সালের ১২ জুন দুই আসামীর অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন বিজ্ঞ আদালত।