বিডি নীয়ালা নিউজ(৫জানুয়ারি১৬)-: প্রথমে নাতি নাতনি পরে নাতি নাতনির নানা এরপর নাতির মা একের পর এক হসপিটালে সেই জন্য তেমন লেখতে পারি নাই লিখতেও পারি নাই । আমার অনেক কিছু নিয়ে লিখার ইচছা আছে লিখবও এখন অৰশ্য সবাই বাসায় এতো বিপদের মধ্যে একটা বিষয় নিয়ে না লিখলেই নয় তাই আজকের এই লিখা আমার ড্রাইভারের বিয়ে হঠাৎ করে আমার ড্রাইভার বলল খালাম্মা আমার দুই দিনের ছুটি দরকার চোখে মুখে সুন্দর স্নিগ্ধ হাসি এবং সেই হাসির সৌন্দর্য বর্ননাতীত আমি বললাম কেন কিসের জন্য ছুটি সে বলল মা কয়েকটা মেয়ে দেখেছে গিয়ে পছন্দ করে আসতে বলেছে আমার মনটা খারাপ এরমধ্য এতসুন্দর প্রফুল্ল ভাব দেখে কারনটা বের করার চেষ্টা করলাম আসলে হোক ড্রইভার হোক ধনী বিয়েতো সবার জন্য বিয়েই এক জন ছেলে ঊনিশ অথবা এর আগ থেকেই একটি মেয়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে আজ তার সেই মহিন্দ্র ক্ষণ এতো দিনেরআশা আকাঙ্খা মিলে মিশে একাকার এতে এতো কিছু মিশ্রিত ছিল বলেই হয়তো তা এতো সুন্দর ছিল কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন সবছেলের ক্ষেত্রেই কি এমন হয় তাহলে সংসারে এতো অশান্তি কেন ? তার পর মেয়ে দেখে এসে আর তর সইলো না আবার ছুটি চাইলো এবার বিয়ের জন্য বললাম মাসের শেষে কিসের বিয়ে সে বলল খালাল্মা এই মেয়ে যদি এখন বিয়ে না করি তবে এই মেয়ে আর পাইতাম না মেয়ের হাতের লেখা নিয়ে এসেছিল সেই লেখাটা আমেকে না হইলে পন্ঞাচ বার দেখিয়েছে মেয়ের সাথে কি কথা হয়েছে তাও প্রায় পন্ঞশ বার লেছে চলব ।
আমার ড্রাইভার বিয়ে করতে গেলো, এখনো আসে নাই । দশ দিনের ছুটি চাইলো, বিরক্ত হয়ে নয় দিনের ছুটি দিলাম । বিয়ের পরবর্তী ভার্সনতো আমার জানা আছে । আমার বিয়ের সময় আমার হবু বরের খুশী আমার ড্রাইভারের চেয়ে একহাজার গুন বেশী ছিল । আমার মেয়ের ক্ষেত্রেও তাই ছিল । পরবর্তীতে এই খুশী কোথায় উড়ে গেল । মেয়েকে যখন এবিষয়ে জিগেস করলাম, মেয়ে বলল ছেলেরা বলবে মেয়েদের দোষের কারনে এমন হয়েছে কিন্তু আমি এমন মেয়েদের কথা জানি তারা সংসার জীবনে খুবই সৎ, দেখতে সুন্দর,সাংসারিক , ধনী শিক্ষত তাদেরওতো সংসারে শান্তি নাই । আমার একটা প্রশ্ন স্বামীরা কী চায়? এখন অবশ্য উত্তরটা আমার জানা হয়ে গেছে । স্বামীরা সংসারে শুধু অশান্তি চায়, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় । আমার মনে হয় কিছু কিছু স্বামী হীনমন্যতায় ভোগে কিছু কিছু উচ্চমন্যতায় ভোগে । কেন স্বামীরা সঠিক জায়গায় আসতে পারেনা । এটাকী ওদের অক্ষমতা নাকি ইচ্ছাকৃত নাকি চরম স্বার্থপরতা, মেয়েরাকি মানুষ না তারাকি মেয়েদেরকে মানুষ মনে করেনা । বাংলাদেশে নিরানববই ভাগ মেয়েরা কোন নাকোন ভাবে ভুক্তভূগি সবচেয়ে বেশী ভুক্তভূগি সহজ সরল ভালো মেয়েরা । স্বামীর সাথে যারা অনর্গল মিথ্যা বলতে পারে তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা সংসার রক্ষা পায় কিন্তু এটা কয়জন পারে । দেখেন বহিঃ বিশ্বে কিন্তু সংসার বলে কিছু নেই । বাংলাদেশে এখনও সংসার নামের বস্তুটি জীবিত আছে । কিন্তু মুমূর্ষু অবস্হয়, এটাকে আপনারা মেরে ফেলবেন না, এখনো আমরা বাংগালী মেয়েরা ঘর গুছাতে চাই । স্বামীর জন্য রান্না করতে চাই, তাকে হাতে তুলে খাওয়াতে চাই, সন্তান মানুষ করতে চাই, ইত্যাদি ইত্যাদি। মেয়েরা এখন শিক্ষিত হচ্ছে, সচেতন হচ্ছে, মেয়েদের উপর যদি এমন নিরব নির্যাতন চলতে থাকে তবে পরিনতি হবে ভয়াবহ । উপরন্তু আমরা মুসলমান, আমরাতো যেমনতেমন জীবন যাপন করতে পারবোনা । তাছাড়া আমাদের সবারঘরে মেয়ে আছে, না হয় বোন না হয় কন্যা আর মা তো আছেই । সমস্যাটা কিন্তু আমার একার না, ঘুরেফিরে সকলের। আমরা সবাই যদি একটু সচেতন হই । সুন্দর একটা পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার করি, দোষ কী তাতে ।
নাজনীন হাসান
প্রাক্তন প্রোফেসর
প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ।