লালমনিরহাট, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ : দরিদ্র পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পুত্রকে হারিয়ে দিশেহারা শহিদ সুজন হোসেনের বাবা মা । একদিকে সন্তান হারানোর শোক অন্যদিকে ক্ষুধার জ্বালা এ  দুয়ে যন্ত্রণাক্লিষ্ট সময় পার করছেন তাঁরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে সুজন শহিদ হলেও অতিদরিদ্র পরিবারটির পাশে এখনও পর্যন্ত দাঁড়ায়নি কোন দল বা ব্যক্তি।

জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামের সহিদুল ইসলাম ও রিজিয়া বেগম দম্পত্তির একমাত্র পুত্র সন্তান সুজন হোসেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে আহত হন সুজন হোসেন। সহযোদ্ধারা তাকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ৬ আগস্ট  সুজন হোসেনের মরদেহ তার নিজ গ্রামে নেওয়া হলে পুরো এলাকা জুুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। ওইদিন বাদ আছর তার জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়। সুজনের এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার।
সরেজমিনে সুজনের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তিন বোন, বাবা ও মা নিয়ে সুজনের সংসার। বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী। ছয় সদস্যের অভাবী সংসারের হাল ধরতে ঢাকার আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি নেন সুজন। পরিবারের সকল ব্যয়ভারই ছিলো তার।
শোকে মুহ্যমান সুজনের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, “শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় বর্তমানে উপার্জনে অক্ষম হয়ে ঘরে পড়ে আছি। অভাবী সংসারের একমাত্র সম্বল আমার ছেলে নির্মমভাবে গুলিতে নিহত হলো। এখন সংসার চলবে কিভাবে?”
স্থানীয়রা জানান, ৬ আগস্ট সুজনের মরদেহ বাড়িতে আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত  খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে তার পরিবারের সদস্যরা। কম বয়সে সংসারের হাল ধরে দুই বোনের বিয়েও দিয়েছিলেন সুজন। বাড়িতে রয়েছে তার আরও একটি ছোট বোন। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এক বোন তার সন্তানসহ ফিরে এসেছেন বাবার বাড়িতে।
হতবিহ্বল মা-বাবা ও বোনদের পাশে স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। তারা বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতা পেলে কিছুটা হলেও কষ্ট কমবে পরিবারটির।

bss\

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে