shekh_hasina

বিডি নীয়ালা নিউজ(১১ই ফেব্রুয়ারী ১৬)-গাজীপুর প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৬তম জাতীয় সমাবেশ-২০১৬ এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ভিডিপি একাডেমিতে তিনি এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন।

এর আগে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে আনসার-ভিডিপি একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সচিব মোজ্জামেল হক খান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নাজিম উদ্দীন।

এরপর প্রধানমন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানায় আনসার বাহিনীর একটি চৌকস দল। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হওয়ার পর একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আনসার বাহিনীর সদস্যরা কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন।

কুচকাওয়াজের পর কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আনসার সদস্যদের পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর এ বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে দিক-নির্দেশনামুলক বক্তব্য দেন তিনি।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে আনসার বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এ বাহিনীর ৬৭০ জন সদস্য মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। একাত্তরে তারা মুক্তিকামী জনগণের মধ্যে ৪০ হাজার অস্ত্র বিতরণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এ বাহিনীর ২০ জন বীর সদস্য বাংলাদেশের প্রথম সরকার মুজিবনগর সরকারের শপথের দিনে গার্ড অব অনার দিয়েছিলেন। আমরা গভীর শ্রদ্ধাভরে তাদের স্মরণ করি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফায় আনসার বাহিনীকে মিলিশিয়া বাহিনীর মর্যাদা দেয়ার দাবি জানানো হয়েছিল। জাতির যেকোনো প্রয়োজনে আনসার বাহিনী সাহসকিতার সঙ্গে সাড়া দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার আনসার বাহিনীর সদস্যদের জন্য কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে পাঁচ লাখ টাকার অনুদানের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া আহত হলেও অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যাটালিয়ন আনসারদের পারিবারিক রেশনের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। মহিলা থানা প্রশিক্ষিকাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়েছে।

‘এই বাহিনীর কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর ট্রেনিং সেন্টার ছাড়াও বিদেশে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমি জেনে আনন্দিত হয়েছি, ১৫টি ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তরে উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার সামগ্রিক উন্নয়ন বান্ধব সরকার। দেশীয় উন্নয়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ চলছে। কর্ণফুলি নদীতে টানেল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক উন্নয়ন ও ঢাকা-চট্রগ্রাম চার লেন সড়ক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট চার লেন মহাসড়কেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশে আজ মাথাপিছু আয় বেড়ে ১৩২৬ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে। বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। জাতীয় আয়ে প্রবৃদ্ধি এখন সাড়ে ৬ ভাগ। দারিদ্রের হার কমে ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি।

তিনি বলেন, এই সাত বছরে প্রায় একশ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছি আমরা। বিনামূল্যে বই বিতরনের ব্যবস্থা করেছি। ১ জানুয়ারি ৩৩ কোটি ৩৭ লাখের বেশি বই বিতরন করেছি। প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ শিক্ষার্থী বৃত্তি পাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে তিনজনকে বাংলাদেশ আনসার পদক (সাহসিকতা), সাতজনকে প্রেসিডেন্ট আনসার পদক (সাহসিকতা), একজনকে মরনোত্তর বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক (সাহসিকতা), ছয়জনকে বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (সেবা) পদক, ৩৭ জনকে প্রেসিডেন্ট আনসার (সেবা) পদক, ১৯ জনকে প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল (সেবা) পদক প্রদান করা হয়।
এছাড়া ২০১৪-১৫ কার্যকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রথম পুরস্কার হিসেবে ১৭ জনকে স্বর্ণপদক, দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে ২৫ জনকে রৌপ্যপদক, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ২১ জনকে ব্রোঞ্জ পদক ও ৪০ জনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে