বিডি নীয়ালা নিউজ(৩জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদন: ২০১৬ সালে প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বড় যে বিপ্লবটি ঘটবে তা হচ্ছে, ‘আপনার রক্তনালিতে ঘুরে বেড়াবে জীবন্ত রোবট—শিরায়-ধমনিতে, ক্যানসার কোষ খুঁজে বেড়াবে, ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করবে।’
নিউইয়র্ক টাইমস-এর ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ সংখ্যায় এ প্রশ্ন করেছেন এবং এর এই উত্তর দিয়েছেন নিকোলাস ক্রিস্টোফ। দু-দুবার পুলিৎজার পুরস্কার পাওয়া এই কলাম লেখক আমেরিকার অগ্রগণ্য চিন্তাবিদ হিসেবেও খ্যাতিমান।
তা পড়ে বাংলাদেশের মানুষের নববর্ষ হয়ে উঠেছে গৌরবের। কারণ এই যে জীবন্ত রোবট, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র, এটা নিয়ে গবেষণা করছেন যিনি, তিনি আমাদের ঢাকার সন্তান। অধ্যাপক তাহের এ সাইফ। বর্তমানে আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণা করছেন। মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সেন্ট প্লাসিডস স্কুল থেকে (১৯৭৭), উচ্চমাধ্যমিক ঢাকা কলেজ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক। ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর অধীনে স্নাতকোত্তরের ছাত্র ছিলেন।
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. তাহেরের নেতৃত্বে তাঁর ছাত্ররা করছেন এক স্বপ্নময় গবেষণা। তাঁরা জীবন্ত রোবট তৈরি করেছেন। আণুবীক্ষণিক আকারের এই রোবট আপনাআপনি সাঁতার কাটতে পারে মানুষের রক্তনালিতে। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে নেচার পত্রিকায় প্রথম বেরোয় এই সাফল্যের খবরটি। তারপর এটা এসেছে অনেক বড় বড় প্রচারমাধ্যমে। আর টেকনিক্যাল জার্নালে বেরোচ্ছে টেকনিক্যাল প্রবন্ধ।
কেন ড. তাহেরের এই কাজটা বৈপ্লবিক? কেন নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এটা হতে যাচ্ছে ২০১৬ সালে প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বড় ঘটনা?
তাঁরা প্রথমে হৃৎপিণ্ডের কোষ থেকে বানিয়েছেন সেই বায়ো-বট যা, সাঁতার কাটতে পারে। এখন তাঁরা বানাচ্ছেন স্টেমসেল থেকে নেওয়া নিউরন আর পেশিকোষ সমন্বয়ে জৈব রোবট। নিউরনগুলোকে এই রকম দীক্ষা দেওয়া হবে যে তারা নিজে নিজেই সংকেত পাবে, কোথায় তাদের যেতে হবে, ধরা যাক, ক্যানসার সেলে চলে যাবে এই রোবট, নিউরনের নির্দেশে। সেখানে প্রতিষেধক উৎপাদনকারী কিছু কোষগুলো নিজে নিজেই ক্যানসার সেলকে ধ্বংস করার উপাদান নিঃসরণ করবে। তাহলে আর বাইরে থেকে ক্যানসারের কোনো ওষুধই দিতে হবে না। এই রকম আরও অনেক রোগের বেলায়ও বাইরের কোনো রাসায়নিক ওষুধই দেওয়ার দরকার পড়বে না। সেটা ঘটলে ঘটে যাবে সত্যিকারের বিপ্লব। চিকিৎসাবিজ্ঞান যাবে পাল্টে। এই বড় স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
-নিউইয়র্ক টাইমস