বিডি নীয়ালা নিউজ(২ই মে১৬)-অনলাইন প্রতিবেদনঃ ‘সবার আগে আমি যাবো’ আমাদের এমন সাংস্কৃতিক মানসিকতার আগে পরিবর্তন করতে হবে। নইলে এ সমস্যা সমস্যাই থেকে যাবে, বলছিলেন রাজধানীর মৎস ভবন ট্রাফিক সিগনালে দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম। তিনি আরও বললেন, ‘তারপরও আমরা এ বিষয়ে সচেতন আছি বলেই বিষয়টি এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে।’ বিষয়টি হল প্রতিদিনের অতি পরিচিত ফুটপাতে মটর সাইকেলের বেড়ে যাওয়া উৎপাত।
সন্ধ্যায় রাজধানীর মৎসভবন থেকে শাহবাগের পথে আর কাকরাইলের মোড় থেকে রূপসী বাংলার ফুটপাতে চলতে হরহামেশাই মটর সাইকেল বিড়ম্বনায় পরেন পথচারীরা। হঠাৎ পেছন থেকে আসা মটর সাইকেলের উৎকট হর্নে তিক্ত হয়ে পাশ কাটাতে গিয়ে কখনো বা ছিটকেও পড়তে হয় পথচারীদের। এই তিক্ততার সমাধান কী? জানতে চাইলে উল্টো প্রশ্ন ছুঁড়ে শাহবাগ থানার এসআই রেজাউল করিম এই প্রতিবেদককে বলেন আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন না করলে এর ফল কোথায়।
নাম প্রকাশ না করার আশ্বাসে দায়িত্বরত আরেক ট্রাফিক আইন নিয়ন্ত্রণক মানসিকতার পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘সে দিনও আমরা রূপসী বাংলার মোড়ে ফুটপাতেচলা ৩০ থেকে ৩৫টি মটর সাইকেল আরোহীকে জরিমানা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিচয় জানতে গিয়ে দেখা গেল তাদের কেউ আপনাদের মতো সাংবাদিক, কেউ আমাদেরই লোক! এমন কোনো সেক্টর নাই যারা এই বিড়ম্বনা তৈরি করছে না। তাই আগে চলা নীতি পরিহার করতে হবে। তবেই মুক্তি মিলবে এ থেকে।’
অন্যায়ভাবে ফুটপাতে চলা মটর সাইকেল আরোহীরা যে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে তা আরও দু বছর আগেই অনুভব করেছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেই ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি বলেছিলেন, ‘মোটর সাইকেলের উৎপাতে ফুটপাতে পথচারীরা শান্তিমতো চলাচল করতে পারে না। এরা মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ এই মোটরসাইকেল।’ বিষয়টি অনুধাবনে তিনি অবৈধ মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করতে এবং ‘বেপরোয়া চালকদের’ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও তার বাস্তবায়ন হয়নি। বরং বেড়েই চলেছে এই বিড়ম্বনা।
প্রসঙ্গত, মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ১৪৩ ধারায় বলা আছে, রাস্তার প্রকৃতি, অবস্থা বিবেচনায় জনসাধারন বিপদের সম্মুখীন হতে পারে এমনভাবে কেউ গাড়ি চালালে সে ব্যক্তি অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবে। এবং এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যাতে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদন্ড অথবা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং অপরাধীর গাড়ি চালানোর সনদ একটি নির্ধারিত সময়ের জন্য অকার্যকর বলে গন্য হবে। ৩ বছরের মধ্যে পূর্ণবার ঘটালে শাস্তি আরও বেড়ে যাবে।