ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ৫টি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপনসহ ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে তিন হাজার ৪৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৫৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে এক হাজার ৭২৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে অনুমোদিত প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫টি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশালে বিটিভির পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তবে একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পে আরো একটি বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করে ময়মনসিংহে বিটিভির একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীন সরকার দেবে ৯৮৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। বাকী ৪০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকার যোগান দেবে। ২০১৭-২০২২ মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিআরডি) সাথে সমন্বয় করে গ্রামীণ এলাকায় সড়ক ও রাস্তা উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পসমূহ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং এলজিআরডি একই রাস্তা বা সড়ক উন্নয়নে পৃথক প্রকল্প গ্রহণ না করে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্মুক্ত স্থানসমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন প্রকল্পে’র আওতায় জনসাধারণের ব্যবহার উপযোগী করে ২২টি পার্ক, ৪টি খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানগুলোর আধুনিকায়ন এবং উন্নয়ন করা হবে।
মুস্তাফা কামাল বলেন, পার্কের উন্নয়ন ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় উত্তর সিটি করপোরেশনের ব্যস্ততম এলাকায় জনগণের ব্যবহার উপযোগি ৭৩টি স্বাস্থ্যসম্মত পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও পরিচালনা, ৪টি পরিবেশ ও স্বাস্থ্যসম্মত জবাইখানা নির্মাণ-পরিচালনা, ১৫টি ফুটওভার ব্রীজের উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন এবং পর্যাপ্ত উন্মুক্ত ও সবুজ স্থান রেখে ৪টি কবরস্থানের উন্নয়ন করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন থেকে দেশের যেখানে চার লেনের রাস্তা করা হবে সেখানে অবশ্যই রাস্তার দুই পাশে সার্ভিস লেন থাকতে হবে। যাতে দূর্ঘটনা কম হয়। এছাড়া রাজধানীতে যেসব খেলার মাঠ করা হবে সেখানে শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া আরো ৫টি প্রকল্প হলো- লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড গভর্নেন্স প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২৩৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, এর বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৯২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প (আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল), এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের যশোর অংশ (পালবাড়ী হতে রাজঘাট অংশ) যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে