মাহফুজার রহমান মন্ডল

 

বিদায় জানানটা খুবই সহজ কিন্তু সবকিছুই  কি বিদায় নেয়? প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজতে গেলে আমাদের অতীতকে নাড়া দিতে হবে। তাইত ২০১৫-এর স্মৃতি জড়ানো ছবিগুলো আর মুছে ফেলা যায় না।

শুরু হয়েছিল ৫ই জানুয়ারী থেকে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম  খালেদা জিয়ার অনির্দিষ্টকালের অবরোধ। অবরোধ চলেছিল টানা তিন মাসেরও বেশী সময় ধরে। ফলে সেই অবরধ আমাদের কিছু দিতে পারেনি, যা দিয়েছে তা বর্ণনা করা আমাদের লজ্জাজনক ইতিহাস। বাসে পেট্রোল বোমা, লাঠির ও পাটকেলের নিক্ষেপণ, অগ্নিদগ্ধে কমপক্ষে ৭৬ জনের মৃত্যু আর ২১০ জনের মত আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে। মেডিকেলের বার্ণ ইউনিট গুলোতে আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছিল।

ফেব্রুয়ারি মাস ছিল বই মেলার মাস। বলা চলে, প্রতি বছর এই মাসে বই মেলায় হাজার হাজার বই প্রেমিক ছুটে গিয়েছিল বই কিনতে ও মেলা উপভোগ করতে কিন্তু লেখক অভিজিৎ রায়কে তারা ছাড়লনা, চীর বিদায় করে দিল। এ যেন জটিল কোন হত্যাকান্ড নয় তারা প্রমাণ করল এই বঙ্গভুমিতে।

দীর্ঘ ৯মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। সেই সময়ে যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন তাদেরই একজন জামায়াত নেতা মুহম্মদ কামরুজ্জামানকে ১১ই এপ্রিল ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারা হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৬ই জুন ঢাকা সফরে আসেন সঙ্গে ছিলেন পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তির বীজ বপন করা হয়েছিল কিন্তু সরকার পালাক্রমে রদবদল হয়েছে চুক্তির কোন হিসেব মেলেনি । ৩১শে জুলাই মধ্যরাতে দুইটি দেশের ছিটমহল  বিনিময় হলে ৬৮ বছরের দীর্ঘ সীমান্ত চুক্তির ফসল বাংলার জনগণ ঘরে তুলে।

এই সোনার বাংলায় জঙ্গি হামলা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২৮শে সেপ্টম্বর রাজধানীর গুলশানের সড়কে ইতালী নাগরিক সিজার তাবেলাকে হত্যা করা হয়।এছাড়া ২৩শে অক্টোবর তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে বোমা হামলায় এক কিশোর নিহত ও শতাধিক লোক আহত হয়।

নভেম্বর মাসের ৮ তারিখে সেই রাজনকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেধে নির্যাতন করে হত্যার ছবি প্রচার করা হলে, দোষী ব্যাক্তিদের অভিলম্বে বিচার সম্পন্ন করে মৃত্যুদন্ডের রায় বহাল রাখা হয়।সেই মাসের ২১ তারিখে মানবতা বিরোধি বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

সবকিছু মিলে বিদায়ী ২০১৫ পরের প্রজন্মে স্মৃতি হয়ে থাকবে। সরকারের চেষ্টা ও জনগণের প্রত্যাশা যেন একীভুত হয়ে থাকে। আর গণতন্ত্রের  ধারাবাহিকতা যেন বহাল থাকে কলঙ্কমুক্ত জাতির স্বার্থে।

-সম্পাদক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে