ডেস্ক রিপোর্টঃ আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংবিধানসম্মত আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গণভবনে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র ঐক্যফ্রন্ট আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের চিঠি নিয়ে সকালে ড. কামালের বাসায় যাই। এ সময় সংলাপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া সংবিধানসম্মত আলোচনার জন্য এখন প্রস্তুত আওয়ামী লীগ। আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর প্যাডে শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে কামাল হোসেনকে উদ্দেশ করে লেখা হয়েছে, সালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আপনার ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পত্রের জন্য ধন্যবাদ। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে আলোচনার জন্য আমার দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই আলোচনার জন্য আপনি যে সময় চেয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ০১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখ সন্ধ্যা ৭টায় আপনাকে আমি গণভবনে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে কামাল হোসেনের দল গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, বৃহস্পতিবার ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গণভবনে যাবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সব দলের প্রতিনিধি সেখানে থাকবেন। আজই নামের তালিকা তৈরি করে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা শুধু ৭ দফা ছাড়া্ বর্তমান যে বিষয়গুলো আছে সেই তা নিয়ে দেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব।

গত রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর দুটি চিঠি দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সংলাপে বসার কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিজেই সংলাপের নেতৃত্ব দেবেন বলে জানান তিনি।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে সাত দফা দাবি এবং ১১টি লক্ষ্যসংবলিত চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফীকুল্লাহ চিঠি পৌঁছে দেন। চিঠিটি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান গোলাপ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও সদস্য এসএম কামাল হোসেন।

এর আগে ঐক্যফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শনিবার দুপুরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবন এবং ওবায়দুল কাদেরের বাসায় চিঠি পৌঁছে দেয়ার। কিন্তু দুজনই পটুয়াখালীতে থাকায় চিঠি দেয়া হয়নি। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ ২১ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী শনিবার সেখানে সফরে যান।

ওবায়দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং দলের শীর্ষ নেতারা তার সফরসঙ্গী হন। গত শুক্রবার রাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে চিঠির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল শনিবার দুপুরের মধ্যে ওই দুজনের কাছে চিঠি পৌঁছে দেয়ার।

এদিকে শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে চিঠি দেয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন নেতারা।

স্থায়ী কমিটির এক নেতা যুগান্তরকে বলেন, তফসিল ঘোষণার আগেই সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফাসহ একটি স্মারকলিপি দেয়া হয়। তার আগে নির্বাচন কমিশনেও একটি স্মারকলিপি দেয়া হবে।

J/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে