দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের নিয়ে বিএনপির সিরিজ বৈঠকে সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।  

মঙ্গলবার(১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকের পর রাতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বেশি কিছু এখন বলার নেই।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তরণে দলের করণীয় সম্পর্কে সিনিয়র নেতাদের মতামত নিয়েছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বুধ ও বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর তিন দিনের বৈঠক নিয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে।

বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিরপেক্ষ ব্যক্তি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি। দলীয় নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহারের দাবির পক্ষে আন্দোলন জোরদার করতে অধিকাংশ নেতা মতামত দিয়েছেন।

দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মকৌশল ঠিক করার লক্ষ্যে মতামত জানতে বিকাল ৪টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিকেল চারটা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাড়ে তিন ঘন্টা এই বৈঠক হয়। বৈঠকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মিলে উপস্থিত ৬২ জনের মধ্যে ২৮ জন বক্তব্য রাখেন।

এর মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান, মীর নাসির উদ্দিন, বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ ছিলেন।

উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মনিরুল হক চৌধুরী, মশিউর রহমান, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, লুৎফর রহমান খান আজাদ, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, ফজলুর রহমান, শাহজাহান মিয়া, সুকোমল বড়ুয়া, খন্দকার মুক্তাদির আহমেদ, এসএম ফজলুল হক, আবদুল হাই, ভিপি জয়নাল আবেদীন, গোলাম আকবর খন্দকার, অধ্যাপক শাহেদা রফিক, আফরোজা খানম রীতা, তাহসিনা রুশদীর লুনা, ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, আবদুল লতিফ খান, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিল্লাহ, একরামুজ্জামান, তৈমুর আলম খন্দকার, মইনুল ইসলাম শান্ত, মাহবুবুর রহমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, শাহজাদা মিয়া, আবদুল হাই শিকদার, এনামুল হক চৌধুরী, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি,  আতাউর রহমান ঢালী, বোরহান উদ্দিন, সৈয়দ শামসুল আলম, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, নজমূল হক নান্নু প্রমুখ।

কেউ কেউ দলের অঙ্গসংগঠনগুলো বিশেষ করে যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্র দলকে আন্দোলনমুখী নেতৃত্বে পূর্ণগঠনের কথা বলেন বলে জানা গেছে।

তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরের সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন, বেলাল আহমেদ ও চেয়ারপারসন কার্যালয়ের এবিএম আবদুস সাত্তার ও রিয়াজ উদ্দিন নসু উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত ৫০২ সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে ৩৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৭৪ জন।

বুধবার দ্বিতীয় দিনে হবে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক ও সহ সম্পাদকদের সঙ্গে এবং পরদিন বৃহস্পতিবার হবে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার আগে ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল।

ban/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে