ডেস্ক রিপোর্টঃ সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা আরো ৪ লাখ বৃদ্ধি করে ৩৯ লাখে উন্নীত করা হবে।বর্তমানে ৩৫ লাখ ব্যক্তিকে বছরে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব আলী নূর জানান, বয়স্ক ভাতার কর্মসূচি দেশের ৬৮ হাজার গ্রামের সিনিয়র সিটিজেনদের মনোবল অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় এই ভাতা বেশ উপকারে আসে।আগামী অর্থ বছরে বয়স্ক ভাতার সংখ্যা আরো কমপক্ষে ৪ লাখ বাড়নো হতে পারে। প্রতি বছরই ভাতা ভোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে তিনি জানান।

প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে এই ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, বয়স্ক জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসা ও পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধি করে তাদের মনোবলকে জোরদার করণের লক্ষ্যে সরকার এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই জন্য সরকারের জাতীয়, জেলা, মহানগর,উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটি রয়েছে। এই কমিটি বয়স্কদের মনোনয়ন করে ভাতা প্রদানের সুপারিশ করে থাকে। তারা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এই টাকা উত্তোলন করে থাকেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট ও ব্যবস্থাপনা শাখার যুগ্ম সচিব সাঈদা নাইম জাহান জানান, ১৯৯৭-৯৮ সালে এই কর্মসূচি যখন চালু করা হয় তখন ছিল মাত্র ৪ লাখ ৩০ হাজার। আর বর্তমানে তার সংখ্যা হচ্ছে ৩৫ লাখ। সরকারের জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি প্রতি বছরই এই সংখ্যা বাড়িয়ে থাকে। গত বছর ২০১৬-১৭অর্থ বছরে ৩১ লাখ ৫০ হাজার লোক ভাতা পেতেন। বর্তমানে ৩৫ লাখ বয়স্ক লোক প্রতিমাসে ৫০০ টাকা হারে বছরে ৬ হাজার টাকা করে ভাতা পান।

বেসরকারি সংস্থা প্রবীণ বন্ধুর নির্বাহী পরিচালক ডা. মহসীন কবির লিমন জানান, সরকারি -বেসরকারি বিভিন্ন তথ্যসূত্র অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবীণ বা সিনিয়র সিটিজেন। ২০২৫ সাল নাগাদ প্রবীণদের সংখ্যা হবে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ, ২০৫০ সালে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি এবং ২০৬১ সালে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, ২০৫০ সালের দিকে এদেশের ২০ শতাংশ নাগরিক প্রবীণ হবেন এবং শিশুসংখ্যা হবে ১৯ শতাংশ। আরও লক্ষণীয় তথ্য হলো, বিশ্বের সর্বত্র অতি প্রবীণ যাদের বয়স ৮০ বছরের উপরে তাদের সংখ্যা বাড়ছে দ্রুত হারে। বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষের গড় আয়ু ৭২ বছর ছাড়িয়ে গেছে। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বয়স্ক আর শিশু কিশোরের সংখ্যা প্রায় সমান সমান হয়ে দাঁড়াবে। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সিনিয়র সিটিজেনদেরকে সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচির আওতায় আনতে এখনই সরকারের কর্মসূচির আওতার পরিধি সম্প্রসারণ করতে হবে।

প্রবীণ হিতৈষী সংঘের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এসএম আতিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবীণদের জন্য ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রবীণদের মনোবল অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন। আগামীতে এই সংখ্যা আরো বাড়ানো হলে এদেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার মনোবলকে আরো জোরদার করবে। তাদের মর্যাদা অনেক বাড়বে।

K/K/N.

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে