ডেস্ক রিপোর্ট : জেলার মধুপুর পাহাড়ি অঞ্চলে জলডুগি জাতের আনারসের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদার কারণ হলো, ছোট আকারের এ আনারস সুঘ্রাণযুক্ত,কড়া মিষ্টি, রসালো, অত্যন্ত সুস্বাদু এবং রাসায়নিকমুক্ত।
উল্লেখ্য, মধুপুরের আনারস নিয়ে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে নানা ধরণের বিরূপ ধারণা ছিল ক্ষতিকর রাসায়নি প্রয়োগের কারণে ।তাই অনেকে আনারস খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। তারা আবার আনারস খেতে শুরু করেছেন, অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা জলডগি আনারসের মাধ্যমে। আর এ আনারসের পরীক্ষামুলক প্রথম চাষ করেন স্থানীয় কৃষক ছানোয়ার হোসেন। তার পথ অনুসরণ করে মধুপুরের অনেক কৃষক এখন জলডুগি আনারস চাষ করছেন।
মধুপুরের মহিষমারা গ্রামের কৃষক কৃষক ছানোয়ার হোসেন জানান, বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে তিনি এ আনারস চাষ শুরু করেছেন। ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহারে চাষ করা আনারস জন স্বাস্থ্যের মারাতœক ক্ষতি ডেকে আনে। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে নানাবিধ রোগ-ব্যধি দেখা দেয়।এ আনারস নিজের সন্তানকে আনারস খাওয়ানো ঠিক নয়। অন্যের সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য তা চাষ করাও ঠিক হবে না।এ বোধ থেকে তিনি ছোট জাতের জলডুগি আনারস অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন ।
অপর আনারস চাষি সাঈদ জানান, আষাঢ় মাসের শেষ দিক থেকে শ্রাবণ মাস হলো আনারসের ভরা মৌসুম। এই সময় আনারস পাঁকা শুরু হয়। তবে এ সময়টা বর্ষা মৌসুম হওয়ার কারণে আনারস পরিবহনে ঝামেলা থাকে। তাই কেমিক্যাল ব্যবহার করে আগেই আনারস পাঁকিয়ে বিক্রি করে ফেলেন চাষিরা। কিন্তু সে আনারস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আবার ঠিকমতো বাজারজাত করতে না পারায় তাদেরও ক্ষতি হয় অনেক সময়। রাসায়নিকমুক্ত আনারস বাজারজাতের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে চাষিরা অর্গানিক পদ্ধতিতে জলডুগি আনারস আরো চাষ করবে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, আনারসে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম। এটি একটি আঁশযুক্ত ফল, যা থেকে প্রয়োজনীয় ফাইবার বা আঁশ ও ক্যালরি পাওয়া যায়। আনারসে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ কম। সুস্বাদের জন্য অধিকাংশ মানুষের কাছে প্রিয় আনারস। কিন্তু রাসায়নিকযুক্ত আনারসে প্রতি মানুষের অনীহা দেখা দেয়। জলডুগি আনারস অর্গানিক পদ্ধতিতে হওয়ায় এর চাহিদা দেখা দিয়েছে। তিনি আরো জানান,মধুপুরে যারা আনারস চাষ করে তাদেরকে একত্রিত করে অর্গানিক পদ্ধতিতে আনারস উৎপাদনের একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে । এতে কৃষকরা সাড়া দিয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আবু আদনান বলেন, সুস্বাদু জলডুগি আনারসের আবাদ মধুপুরের আরো সর্বত্র চাষ হোক। এতে কৃষি অধিদপ্তর আরো সহযোগিতা করবে। সকল প্রকার বিষাক্ত কেমিক্যাল ও মেডিসিনমুক্ত ফলের আবাদ হোক মধুর হাড়ি হিসেবে পরিচিত মধুপুর গড়ে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে