শেখ খায়রুল ইসলাম, পাইকগাছা খুলনা প্রতিনিধি: জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের জনগণ সবসময় বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভয়াবহ দূর্যোগের ঝুঁকিতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল।বরাদ্দের অভাবে সেখানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো আটকে আছে। এই অবস্থায় ওই অঞ্চলের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা ও দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলা ও সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।
আজ শুক্রবার খুলনা জেলার পাইকগাছার কপিলমুনি বাজারে নাগরিক সংগঠন‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন সাবেক ছাত্র নেতা প্রভাষক রেজাউল করিম খোকন, সাংবাদিক নেতা সাকিলা পারভীন, আওয়ামী লীগ নেতা স্বপন সাহা, প্রভাষক বিষ্ণুপদ মণ্ডল,অনির্বাণ লাইব্রেরির সহ-সভাপতি মানিক ভদ্র, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা দুলাল দেবনাথ,ইউপি সদস্য বিষ্ণু পদ রায় ও স্মিতা রায়, যুবলীগ নেতা প্রদীপ দত্ত, প্রত্যাশা সমবায় সমিতির সভাপতি শুভাশীষ ঘোষ,সচেতন সংস্থার বিদ্যুৎ বিশ্বাস,নদী কর্মী আলাউদ্দিন মোড়ল, সাংবাদিক রিয়াদ হোসেন প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭টি বড় প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। যা এদেশের মানুষের জীবন-জীবিকা,সম্পদ,খাদ্য,পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সংকট সৃষ্টি করেছে।এ সংকট দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে সব থেকে বেশি। এরপর কপোতাক্ষসহ নদ-নদী দখল-দূষণ ও ভরাটের কারণে এই ঝুঁকি আরো বেড়েছে।এই সংকট থেকে উত্তোরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল জনশূণ্য হয়ে পড়বে।বক্তারা আরো বলেন,নদ-নদী ভরাট ও দুষণ,দীর্ঘমেয়াদী লবণাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষিসহ অন্যান্য কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাতক্ষীরা,খুলনা ও বাগেরহাট জেলা।ওই এলাকাকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনা নিতে হবে।প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। উপকূলবাসীর সুপেয় পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে উপকুলীয় এলাকায় ‘একটি বাড়ি একটি সেল্টার হোম’ কার্যক্রম শুরু করতে হবে। নদীভাঙ্গন ও ভূমিক্ষয় ঠেকাতে উপকূলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। উপকূলের রক্ষাকবচ বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে ‘উপকূল উন্নয়ন বোর্ড’ গঠনের দাবি জানান তারা।