বিএনপিসহ যারা পদ্মা সেতু চায়নি পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, সেতু উদ্বোধন নিয়ে মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে, এই উচ্ছ্বাস যেন না থাকে সেজন্য একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায় বিএনপি। সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সুপ্রিম কোর্টের সামনে সন্ত্রাস করছে।

রোববার (২৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে। সে আনন্দে মানুষের মধ্যে উৎসব বিরাজ করছে। অথচ বিএনপি এসময় দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে, যেন পদ্মা সেতু উদ্বোধনে কোনো ব্যাঘাত ঘটে।

হাছান মাহমুদ বলেন, পদ্মা সেতু শুধু সেতু নয়। এই সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা, এটি যেমন অত্যন্ত গর্বের মর্যাদার ও এটি আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। একটি রাষ্ট্র এরকম একটি দীর্ঘতম সেতু নিজস্ব অর্থায়নে করতে পারে সেটি বিশ্ববাসীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন। এটি আমাদের গর্ব, অহংকার ও সক্ষমতার প্রতীক। পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। সেতু আমরা করতে পারবে না বলে বিএনপির খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুলসহ আরও অনেকেই আস্ফালন করেছিলেন।

তিনি বলেন, আমার বলতে দ্বিধা নেই এবং তার প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবও পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিলেন। সেখানে যেন বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন না করে সেজন্য তার পক্ষ থেকে নানা অপতৎপরতা ছিল। যখন পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে বিশ্বব্যাংক অভিযোগ তুললো, তখন টিআইবি গভীরে না গিয়ে আগ বাড়িয়ে বারবার বক্তব্য রেখেছে। আরও অনেকেই আছেন তাদের সবার নাম বলে লজ্জা দিতে চাই না। তাদের এসব অপতৎপরতার পর যখন পদ্মা সেতু হয়ে গেছে এটা তাদের জন্য লজ্জার।

‘বিএনপিসহ যারা এই পদ্মা সেতু চায়নি সেতু হয়ে যাওয়ায় তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। পুরো দেশের মানুষ আজ উদ্বেলিত। কখন সেতু উদ্বোধন হবে, সেটা নিয়ে আনন্দিত। যদি মানুষকে সুযোগ দেওয়া হয় পদ্মা সেতু উদ্বোধনীর দিন যাওয়ার, তাহলে পদ্মা সেতুর ছয় কিলোমিটার মানুষে ভর্তি হয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের মধ্যে যেন এই উচ্ছ্বাস না থাকে সেজন্য একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায় বিএনপি। তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। তাই মানুষের দৃষ্টি অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য পদ্মা সেতু নিয়ে নানা রকম আবোল তাবোল কথা বলছেন। এজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সুপ্রিম কোর্টের সামনে সন্ত্রাস করছে। সারাদেশে সমাবেশের নামে আবারও সেই পুরোনো সন্ত্রাস খেলা, গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হলে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা কঠোর হাতে প্রতিহত করবো।

‘পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে’ মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা চোর, যারা দেশকে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল তারা এসব কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ তারা অন্যদেরও একই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পদ্মা একটি খরস্রোতা নদী, বিশাল একটি নদীতে ছয় কিলোমিটার সেতু করা হয়েছে। সেখানে প্রশস্ততা কম। কোনো কোনো জায়গায় এ নদীর প্রশস্ততা অনেক বেশি। প্রতি বছর যেভাবে দু’কূল ভাঙে। এরকম নদীতে সেতু তৈরি করা দুরূহ কাজ। এটি করতে গিয়ে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে ব্যয় কম হয়েছে। এটিতে ষড়যন্ত্র হয়েছে, এ কারণে কয়েক বছর সময় নষ্ট হয়েছে ও ব্যয়ও বেড়েছে। এরপরও এই সেতুতে যে ব্যয় হয়েছে সেটি সাশ্রয়ী ব্যয়। এটি অন্য কেউ যদি করতো তাহলে আরও বেশি ব্যয় হতো।

Jag/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে