করোনাভাইরাসের কারণে দিনদিন আরও জটিল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। শঙ্কা বাড়ছে শিশুদের নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রে তিন সপ্তাহে ৫ লাখেরও বেশি শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। নির্দিষ্ট করে বললে আক্রান্তদের বয়স ১১ বছরের মধ্যে। যাদের এখনও টিকাকরণ শুরু হয়নি। দেশটিতে ১২ বছর বা তার উপরে যাদের বয়স তাদের করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বারবারই বলছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার ইঙ্গিত স্পষ্ট। তাঁরা আগেই বলে রেখেছেন, তৃতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে শিশুরা। সেই পূর্বাভাসও মিলে যাচ্ছে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস জানিয়েছে, তাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী ৫ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত ৫ লাখেরও বেশি শিশু সংক্রমিত হয়েছে। শুধু ১৯ আগস্ট থেকে ২৬ আগস্টের মধ্যে অন্তত ২ লাখ ৩ হাজার ৯৬২ শিশুর কোভিড ধরা পড়েছে। জুন মাসে শিশু-সংক্রমণ ছিল সপ্তাহে সাড়ে ৮ হাজার মতো। দুই মাসে সংক্রমণ বেড়েছে ২৫ গুণ।
যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল খুলেছে বহু প্রদেশে। অন্য দেশগুলোতেও এক-এক করে স্কুল খুলছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে চিন্তায় বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের বক্তব্য, এক-এক করে বহু স্কুলই মাস্ক পরা আবশ্যিক করে দিয়েছে। মাস্ক অনেকটাই সংক্রমণ আটকে দেয়। কিন্তু সবটা তো নয়!
বিশেষজ্ঞদের কথায়, ‘যেসব বাচ্চার টিকাকরণ হয়নি, তাদের শরীরেই বেশি আক্রমণ করছে ভাইরাস।’ কিন্তু যাদের জন্য টিকায় ছাড়পত্র রয়েছে সেই অংশের মধ্যেও টিকা নেয়ায় অনীহা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে টিকা নেয়ার হার বেশ কম।
বিশেষজ্ঞরা বলছ্নে, ‘টিকা নেয়া নেই মানে কোনও নিরাপত্তা নেই!’ নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল বলেছেন, ‘আমাদের একে অপরকে রক্ষা করতে হবে। টিকা নিতে হবে সকলকে। বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পরতে ও অন্যান্য করোনা বিধি মেনে চলতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের একজন মহামারি বিশেষজ্ঞ অ্যান্তনি ফাউচি বলেছেন, ‘স্কুলগুলোতে কোভিডের টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। এটা কোনও কট্টরপন্থা নয়। আগেও এমন হয়েছে। দেশের বহু জায়গায় বহু স্কুলে এমন নিয়ম রয়েছে, বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে হলে পোলিও, হাম, মাম্পস, রুবেলা, হেপাটাইটিসের টিকা দিতে হবে। অতএব এই নিয়ম নতুন নয়। স্কুলে পাঠাতে হলে বাচ্চাকে এবার করোনার ভ্যাকসিনও দিতে হবে।’
D/T