মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ব্যতিক্রমী এবং অনন্য উচ্চতায় রয়েছেন শেখ হাসিনা।শেখ হাসিনা তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এমন কিছু অর্জন করেছেন সে অর্জনগুলো আর কারও নেই।
শুধু বাংলাদেশ তো নয়, বিশ্বের অনেক রাজনৈতিক নেতাও এ অর্জনগুলোর স্পর্শ করতে পারেনি। যে রেকর্ডগুলো শেখ হাসিনা করেছেন সেই রেকর্ড ভবিষ্যতে কেউ ভাঙতে পারবে কিনা তা নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে অনেক সংশয়। আওয়ামী লীগ সভাপতির যে অর্জনগুলো অনন্য, অসাধারণ এবং তুলনাহীন তার মধ্যে রয়েছে:
১. টানা ৪০ বছর একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেওয়া: আওয়ামী লীগ সভাপতি চল্লিশ বছর ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এটি একটি অনন্য অর্জন এই ৪০ বছর তিনি শুধুমাত্র যে আওয়ামী লীগের সভাপতি আছেন তা নয়, তার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত এবং দলের একজন নেতাকর্মী ও মনে করেন না যে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প আছে। এটি একজন রাজনৈতিক নেতার অসাধারণ প্রাপ্তি। আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা মনে করেন যে শেখ হাসিনার জন্য আওয়ামী লীগ আজকের এই অবস্থানে এসেছেন। সে কারণেই তারা মনে করে যে শেখ হাসিনার বিকল্প একমাত্র শেখ হাসিনাই।
২. ১৭ বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী: বাংলাদেশের মতো একটি জটিল রাজনৈতিক মেরুকরণের দেশে যেখানে সরকারের জনপ্রিয় থাকা একটি কঠিন ব্যাপার, সেখানে টানা ১২ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার প্রধানমন্ত্রীত্বের সর্বমোট মেয়াদ ১৭ বছরের বেশি। ১৯৯৬ সালের প্রথম তিনি সরকার গঠন করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগের পুনর্জন্ম দেন শেখ হাসিনা এবং ধীরে ধীরে ২১ বছরের সংগ্রামের পর আওয়ামী লীগকে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়ে আসেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এরপর ২০০৮ এর নির্বাচনে বিপুল তিনি ভোটে বিজয়ী হন এবং তারপর থেকে পরপর তিনটি নির্বাচনে টানা ক্ষমতায় আছেন আওইয়ামী লীগ সভাপতি। বাংলাদেশ শুধু নয় বিশ্বে ১৭ বছর সরকার প্রধান হিসেবে থাকা একটি বিরল ঘটনা। খুব কম সরকারপ্রধানের এই ধরনের বিরল রেকর্ডের অধিকারী।
৩. অর্থনৈতিক উন্নয়ন: আওয়ামী লীগ সভাপতির সাফল্যের একটি বড় দিক হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন বাংলাদেশ ছিলো নিন্ম আয়ের দেশ। সেখান থেকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়, গড় আয়ু থেকে শুরু করে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশকে মনে করা হয় উন্নয়নের রোল মডেল, এটি শেখ হাসিনার নেতৃতেই সম্ভব হয়েছে।
৪. আত্মমর্যাদা এবং নিজের টাকায় পদ্মা সেতু: শেখ হাসিনা কেবল বাংলাদেশকে উন্নত এবং অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার একটি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেননি, বাংলাদেশকে একটা আত্মসম্মান মর্যাদা নিয়ে গেছেন। বিশ্বব্যাংক যখন বাংলাদেশের পদ্মাসেতু নিয়ে আপত্তি ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল তখন প্রধানমন্ত্রী সেই অভিযোগ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে নিজের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন যে পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান। বাংলাদেশের বড় একটা বিজ্ঞাপন হল এখন এই নিজের টাকায় পদ্মাসেতু। শুধু পদ্মাসেতু নয়, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ বিভিন্ন দৃশ্যমান উন্নয়ন এখন বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদার এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছে যেটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।
৫. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার: শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অর্জনের একটি অন্যান্য দিক হলো যুদ্ধাপরাধের বিচার। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যে সমস্ত স্বাধীনতা-বিরোধী রাজাকার, আলবদর গোষ্ঠী বাংলাদেশের মা- বোনদের ধর্ষণ করেছে, নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং অগ্নিসংযোগ লুটপাট করেছে তাদের বিচার ছিল সময়ের দাবি। আওয়ামী লীগ সভাপতি ২০০৮-এর নির্বাচনী ইশতিহারে অঙ্গীকার করেছিলেন যে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন এবং এই অঙ্গীকার পূরণ করে তিনি বাংলাদেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন।
৬. বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার: ৭৫এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই কলঙ্ক উন্মোচন করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। আর এটি করতে যেয়ে আইনের দীর্ঘ লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছেন, প্রচলিত আইনে বঙ্গবন্ধুর বিচার শেখ হাসিনার এক অনন্য অর্জন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ সভাপতির আরো অনেক অর্জন রয়েছে যে অর্জনগুলো তাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে, তাকে করেছ অপরাজেয়। শেখ হাসিনা একজন জননেত্রী থেকে রাষ্ট্রনায়ক রাষ্ট্রনায়ক থেকে এখন বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছেন। এই সামনের দিনগুলোতে হয়তো শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিয়ে যাবেন আরো অনেকদূর এগিয়ে এটি দেশবাসীর প্রত্যাশা।
ban/N