বিনোদন ডেস্কঃ প্রাকৃতিক নিসর্গ আর মনোরম কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে প্রবাহিত ঝরনাধারা রাঙ্গামাটির সুবলং জলপ্রপাত। সেটির আনন্দ উপভোগ করতে এ বর্ষায় ঘুরে আসতে পারেন জলপ্রপাতটি। এটি এখন দেশ ছাড়িয়ে দৃষ্টি কেড়েছে আন্তর্জাতিক পর্যটক ও পর্যবেক্ষক মহলে।

অবসর বিনোদনে সেখানে প্রতিদিন পদচারণা ঘটছে প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসু লোকজনের। ছুটছেন টিনএজ তরুণ-তরুণীরা। প্রকৃতির নৈসর্গিক আধার উপভোগে যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন সুবলং ঝরনা। এটির চারপাশ আবৃত আকাশছোঁয়া ঘন সবুজ পাহাড় দিয়ে। সামনে পরিবেষ্টিত আঁকাবাঁকা কাপ্তাই লেক। সুবলং ঝরনার অবস্থান রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের চিলারধাক নামক দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়।

বরকলের সুবলং এবং সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ও বালুখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ওই পাহাড়ি এলাকাটি গড়ে উঠেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে। সারিবদ্ধ পাহাড়মালার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ওই সুবলং জলপ্রপাতটি। অনেক উঁচু পাহাড় থেকে অনবরত নামে ঝরনাধারার পানি। পানি গড়িয়ে মেশে সরাসরি কাপ্তাই হ্রদ গিয়ে। যা দেখলে মন কাড়ে সবার।

জানা যায়, প্রায় দুই দশক আগে ঝরনাটি আবিষ্কার করেছিলেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। এক সময় সেটি ছিল সবুজ পাহাড় আর ঘন অরণ্যে ঘেরা। পরে পর্যটকদের আকর্ষণ দেখে সেটিকে সংস্কার করে বরকল উপজেলা প্রশাসন। বর্তমানে সুবলং ঝরনাধারা ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি দর্শনীয় স্পট। নদী পথে আসা-যাওয়ার সময় সবার নজর কাড়ে স্পটটি। বরকল উপজেলা প্রশাসন জানায়, বর্তমানে সুবলং ঝরনা দেশে-বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ একটি পর্যটন স্পট নির্মাণ করা হয়েছে। ঝরনাধারার ওপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি সেতু।

এছাড়া পর্যটকদের সুবিধার জন্য সেখানে কয়েকটি অবকাঠামো নির্মাণ করে টিকিট কাউন্টার, বিপণিবিতান, বিশ্রামাগার, টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। স্পটে প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। রাঙ্গামাটির সুবলং ঝরনা দেখতে প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে অসংখ্য পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে স্পটটি। বর্ষা মৌসুম ছাড়াও ঝরনা ধারাটি জেগে থাকে সব ঋতুতে। বর্তমানে পর্যটকদের ভিড় জমছে প্রতিদিন। বিশেষ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে ভিড় জমে বেশি।

রাঙ্গামাটি পর্যটন মোটেল অ্যান্ড হলি ডে কমপে¬ক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, চলতি বর্ষার শুরু থেকেই ঝরনাটির পানি প্রবাহ নামছে। পর্যটকরা নৌ ভ্রমণযোগে দলে দলে উপভোগ করতে যাচ্ছেন আকর্ষণীয় সুবলং ঝরনায়। অনেকে পরিবার, পরিজন ও আপনজনসহ ছুটে যাচ্ছেন সুবলং ঝরনা ধারায়। ঝরনাটির অবিরাম কলকল ধ্বনি সবার দৃষ্টি কাড়ছে।
স্থানীয় পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানায়, গিরিনির্ঝর বড় ঝরনাধারাসহ কাছাকাছি রয়েছে আটটি ঝরনাধারার সমাবেশ। তার মধ্যে মূল ঝরনাধারাটি প্রায় ৩শ’ ফুট উচ্চতা হতে প্রবাহিত। বর্ষাকালে অবিরাম জলধারার পতনে অপরূপ দৃশ্যের অবতারণা করে- যা দেখতে পর্যটকরা ছুটছেন প্রতিদিন।

কীভাবে যাবেন : পর্যটন শহর রাঙ্গামাটি থেকে ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুবলং ঝরনা। এটি দেখতে যেতে হবে রাঙ্গামাটি শহর থেকে ইঞ্জিনবোট বা স্পিডবোট নিয়ে। তবে লোকাল কোনো নৌযান সার্ভিস চালু নেই। যে কোনো নৌ-পরিবহন নিয়ে যেতে হবে রিজার্ভ করে। যাওয়া-আসার সময় উপভোগ করা যায় রোমাঞ্চকর নৌভ্রমণ। ইঞ্জিনবোট নিয়ে যাওয়া-আসার সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা। রিজার্ভ বোট ভাড়া লাগে এক-দেড় হাজার টাকা। আর স্পিডবোট নিয়ে গেলে আসা-যাওয়ার সময় লাগে পৌনে এক ঘণ্টার মতো। ভাড়া ৩-৪ হাজার টাকা।

B/S/S/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে