মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিলে দেশটির সরকারের অপরাধ কিছুটা কমবে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের আগ্রাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের গণহত্যার স্বীকৃতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের চাপ ত্বরান্বিত হলে জনগোষ্ঠিটির দেশে প্রত্যাবর্তন দ্রুত হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিলে মিয়ানমার সরকারের অপরাধ কিছুটা কমবে।
এর আগে গত শনিবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক অনুষ্ঠানে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় অর্থ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া অর্থ সহায়তায় উৎসাহ দেখিয়েছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডসও।
তিনি বলেন, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। তারা অঙ্গীকার করেছেন, কিছু টাকা-পয়সা দেবেন, যাতে আমাদের মামলাটা চলমান থাকে। নেদারল্যান্ডস, কানাডা ওআইসির সদস্যভুক্ত রাষ্ট্র না। তবুও তারা কিছুটা উৎসাহ দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেল আমদানি কমিয়ে উৎপাদনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সংস্থাগুলোর আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানোর চেয়ে বাংলাদেশিদের মতো সুযোগ-সুবিধা দিতে বেশি আগ্রহী। রোহিঙ্গাদের নামে আনা টাকাও যথাযথ খরচ হচ্ছে না বলেও তুলে ধরেন মোমেন।
এ সময় তিনি বলেন, ইউএনসিআর, ইউএনডিপি, ইউনেস্কোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান ফোকাস থাকা উচিত রাখাইন প্রদেশের উপর। রাখাইনে যাতে তারা স্বেচ্ছায় যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করা। কিন্তু তারা শুধু খেয়াল রাখে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ভালো অবস্থানে আছে কি না। রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে সুন্দরভাবে রাখা, এ দেশে চাকরি দেওয়া, এ দেশে অন্য বাঙালিদের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মতো বিষয়গুলো নিয়েই ওই সংস্থাগুলো ব্যস্ত। রোহিঙ্গাদের নামে টাকা আনে, কিন্তু মিয়ানমারে কোনো কাজ করে না।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নে ২০১৭ সালে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমায় ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ শুরু করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা আড়াইশোর বেশি।
So/N