জুয়েল ইসলাম,তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় বাড়িতে শখের পাখি পোষা থেকে প্রতি মাসে ২৮-৩০ হাজার টাকা আয় করছে আরিফুল ইসলাম নামের ৩১ বছর বয়সি এক যুবক। তার বাড়ি উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামে। প্রথমদিকে আরিফুল তার বাড়িতে খাঁচায় করে সখের বষে পাখি পোষা শুরু করলেও এখন সে পুরোদমে বাণিজ্যিকভাবে এটিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাণিজ্যিকভাবে খামারটি তৈরীর পর এখন বিভিন্ন দুর-দুরান্ত থেকে লোকজনেরা আসছে পাখি পালনের কৌশল শেখার জন্য। করোনা মহামারীর কারণে স্বাভাবিক দিনগুলোর চেয়ে পাখি সংগ্রহ কমে গেছে। করোনার দূর্যোগ কেঁটে গেলে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকার উপড়ে অনায়াসে আয় করা সম্ভব বলে জানান আরিফুল। আরিফুলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শুরুতে সখ করে ৩ জোড়া পাখি কিনে নিয়ে আসি পোষার জন্য। এরপর ৫ মাস পর আরও ২ জোড়া নতুন করে পাখি নিয়ে আসি। এর কিছুদিন পরেই এদের মধ্যে ৩ জোড়া পাখি ৫-৬ টি ডিম দেয়। ১ বছরের মধ্যে ৩০ জোড়া পাখি হয়ে যার তার। তখন থেকেই বাড়তে থাকে তার পাখির খামারটি। ডায়মন্ড ডোভ প্রতি জোড়া পাখি খুচরা বিক্রি করছেন ২০০০-২২০০ টাকা ও পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত। মুনিয়া প্রতি জোড়া খুচরা ৫০০-৬০০ টাকা ও পাইকারি ৪০০-৪৫০ টাকা। ফিঞ্চ প্রতি জোড়া খুচরা ৭০০-৮০০ টাকা ও পাইকারি ৬০০ টাকা। বাজরিকা প্রতি জোড়া খুচরা ১২০০-১৬০০ টাকা পাইকারি ৮০০ টাকা। খাদ্য হিসেবে পাখিদের তিনি প্রতিদিন চীনা, কাওন,চিকন ধান ও সূর্যমুখির বিচি দেন। প্রতি জোড়া পাখির পিছনে প্রতি মাসে ৭০-৮০ টাকা খরচ হয় তার। তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এম ফরহাদ নোমান বলেন, খুব অল্প পুঁজি দিয়ে পাখি পালন শুরু করা যায়। এতে জায়গাও খূব কম লাগে। তিনি পশু-পাখি পালনে আগ্রহী উদ্দ্যোক্তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করার কথাও বলেন। ভেটেরিনারি ফিল্ড এসিস্ট্যান্ট ফিরোজ মিয়া বলেন, প্রথমে কমপক্ষে ২ জোড়া পাখি দিয়ে শুরু করলে ভাল হয়। ব্রিডিং উপযোগি খাঁচার দাম সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। দুটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী পাখি নিয়ে দুই জোড়া পাখির বয়স তিন থেকে চারমাসের মধ্যে হলে ভাল। প্রথমে একটি খাঁচার মধ্যে শুধু পুরুষ পাখি কমপক্ষে ৬-৭ মা পর্যন্ত রাখুন। অপর আরেকটি খাঁচায় শুধু স্ত্রী পাখিও সেভাবেই রাখুন। এবার জোড়া মিলিয়ে দুই খাঁচায় দিন। খাঁচায় দেওয়ার ১-২ মাসের মধ্যে হাঁড়ি ঝুলাবেন খাঁচার ১ কোণে। পানির পাত্র থাকবে পাখি বসার থেকে দুরে। আর খাবারের পাত্র হাঁড়ির নিচে থাকলে ভাল। কারণ পাত্রগুলো যেন পাখি মল থেকে নিরাপদ থাকে। বাসা পাল্টালে বা পাখির স্থান পরিবর্তন করলে পাখি প্রজননে সমস্যা হতে পারে। তাই ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।