প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ মিশন ও বহুজাতিক বাহিনীতে দেশের শান্তিরক্ষীদের অনন্য অবদান বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং এ দেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
শনিবার (২৮ মে) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সমর্থন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের শান্তিরক্ষীরা যাতে আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারে, সেজন্য সরকার সব রকম চেষ্টা করবে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির মধ্যেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি স্থাপনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ঐসব দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন।
‘বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে যে গৌরব ও মর্যাদা লাভ করেছে, তা আমাদের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য পেশাদারিত্ব, সাহস, বীরত্ব ও দক্ষতারই অর্জিত ফসল।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ঐতিহাসিক এক ভাষণ দেন।
‘ওই ভাষণে বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধু। তখন থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুপ্রতিম সব রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছে এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত সব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে।’
২৯ মে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হয়। বাংলাদেশেও আগামীকাল দিবসটি পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। এ সময় দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা এবং শান্তিরক্ষীদের সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, সাহস ও নিষ্ঠা দ্বারা বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি শক্তিশালী শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন এবং দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করবেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সেখানে কর্মরত বাংলাদেশের সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
একই সঙ্গে বিশ্বশান্তির জন্য যেসব শান্তিরক্ষী অকাতরে তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন শেখ হাসিনা। এ সময় তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।
Jag/N